New

শ্বেতপত্র

এক যে ছিলো দেশ|| ইহিতা এরিন

আকাশের পরে যে আকাশ তার উন্মুক্ত শূন্যতায়

ঘুড়িটি একা একা উড়ে যাচ্ছে তখনো 

যখন আমাদের মনের সমূহ আলো ছড়িয়ে পড়েছে 

খুনখারাপি রঙে 


হতাশা নয় , দেশের মাটির গন্ধে যখন ভোরের শিশির থমকে থাকে অচেনা ভয়ে 

যখন গ্রামভর্তি প্রজাপতিগুলো 

উড়তে গিয়েও হারিয়ে ফেলেছে  ডানার  রঙ  

ডলারের উচ্চতায় পৌঁছতে পারে নি এখনো যারা দেশের স্বপ্নে বিভোর 

এমন একটা মুক্ত মানবিকতার দেশ

যেখানে বিবেক কাঁটাতারের লালনিশানকে  গুঁড়িয়ে দিতে পারে 

কেবল সাতরঙা ভালোবাসায় 


জোকার বিদূষকের মতো মুছে ফেলে 

নিজের দুঃখের ভেতরে 

সহস্র শৈশবের মুখের ছবি 

আর 

অমলিন একটা দেশের হারিয়ে যাওয়া মানচিত্র ۔۔۔۔!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

3 মন্তব্যসমূহ

  1. ইবনে রসূল ভান্ডারীশুক্রবার, ০২ মে, ২০২৫

    বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি গো

    উত্তরমুছুন
  2. কবিতাটি একটি গভীর রাজনৈতিক, মানবিক ও প্রতীকময় বয়ান।
    এই কবিতাটি একধরনের প্রতীকী প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর। এখানে "ঘুড়ি", "আকাশ", "শিশির", "প্রজাপতি", "সাতরঙা ভালোবাসা" প্রভৃতি চিত্রকল্প ব্যবহার করে কবি আমাদের বর্তমান সমাজ, দেশ এবং জাতীয়তাবোধের জটিল বাস্তবতাকে তুলে ধরেছেন।

    প্রথম স্তবকে, "আকাশের পরে যে আকাশ" – এই বাক্যটি দ্বারা সম্ভবত সীমাহীন সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে, যেখানে ঘুড়িটি একা উড়ে যাচ্ছে। ঘুড়ির এই একাকিত্ব আসলে স্বাধীনতা বা স্বপ্নের প্রতীক, যা এখনো নিঃসঙ্গ, কারণ মানুষের চেতনা আচ্ছন্ন "খুনখারাপির রঙে"। এখানে হিংসা, সংঘাত আর বিদ্বেষে ভরা সামাজিক বাস্তবতাকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।

    দ্বিতীয় স্তবকে, হতাশা নয়, বরং "দেশের মাটির গন্ধে" এক ধরনের ভয়ের চিত্র আঁকা হয়েছে। শিশির থেমে আছে – অর্থাৎ স্বাভাবিক জীবনের শান্ত ছন্দ যেন থেমে গেছে কোনো অজানা আতঙ্কে। "গ্রামভর্তি প্রজাপতিগুলো" রঙ হারিয়েছে, অর্থাৎ শিশুরা কিংবা সাধারণ মানুষ এখন আর স্বপ্ন দেখতে পারে না, তাদের স্বাধীনতা ও সৃষ্টিশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত।

    তৃতীয় স্তবকে, ডলারের উচ্চতায় পৌঁছাতে না পারা মানুষগুলো বোঝাচ্ছে দরিদ্র, নিম্নবিত্ত বা স্বপ্নে বেঁচে থাকা মানুষের জীবনসংগ্রাম। তাঁরা এখনো দেশপ্রেমে বিভোর, কিন্তু প্রাপ্তির জায়গায় শূন্যতা বিরাজ করছে।

    চতুর্থ স্তবকে, কবি একটি "মুক্ত মানবিকতার দেশ" কল্পনা করেছেন, যেখানে বিবেক কাঁটাতারের সীমারেখাকে অগ্রাহ্য করে। সাতরঙা ভালোবাসা এখানে প্রতীক – যেখানে বৈচিত্র্য, সহমর্মিতা আর মানবিকতা একত্রিত।

    শেষে, “জোকার বিদূষকের মতো মুছে ফেলে নিজের দুঃখের ভেতরে সহস্র শৈশবের মুখের ছবি” – কবি দেখান, একজন সাধারণ মানুষ কিভাবে নিজের বেদনা আড়াল করে সমাজের মুখোশ পরে থাকে। শেষ পংক্তিতে "হারিয়ে যাওয়া মানচিত্র" বলছে দেশ কেবল ভূগোলের নয়, একটি মূল্যবোধেরও রূপরেখা যা হারিয়ে যাচ্ছে।

    মূল বক্তব্য:
    এই কবিতাটি গভীর সামাজিক এবং রাজনৈতিক ব্যঞ্জনায় পূর্ণ। এটি একদিকে যেমন নিপীড়িত মানুষের দুঃখের চিত্র এঁকে দেয়, তেমনি মানবিকতা, দেশপ্রেম, স্বপ্ন এবং ভালোবাসার এক নতুন মানচিত্র রচনার আহ্বানও জানায়।

    উত্তরমুছুন

অমার্জিত মন্তব্য করে কোনো মন্তব্যকারী আইনী জটিলতায় পড়লে তার দায় সম্পাদকের না৷