New

শ্বেতপত্র

ফারিহা নূরের দুইটি কবিতা

বাড়ন্ত প্রেম 


সুধার সাথে ক্ষুধা মিশিয়ে রচিত হয় বাড়ন্ত প্রেম 

একটু একটু করে বেড়ে ওঠে, সুন্দর হয় 

যেন কেড়ে নেয় সমস্ত সৌন্দর্য নিষ্পাপ ফুলের 

রাখেনা অনুরোধ ভাবলেশহীন যৌবনের। 


সদ্য বাড়ন্ত, জীবনের সাথে জীবন জুড়ে যে প্রেম জীবন্ত

তার সাথে দেখা হয় না অন্যায়ের। 

সে যেন বেড়ে ওঠে অপরিকল্পিত নগরীর মতো 

পরিকল্পনায় করে না সময় নষ্ট। 


অবিচ্ছেদ্য ভ্রান্তি হয়ে যায় বিভ্রান্ত 

মনের একি মধুর চাওয়া প্রেম হোক অনন্ত 

টাটকা প্রেমের জৌলুসে 

বাহিরে বৃষ্টি ভিতরে ভীষণ ঝড় আসে। 

বাড়ন্ত প্রেম, ঘরে থেকো না বাহিরে যাও 

বৃষ্টি ছোঁয়া পাতার মতো সবুজ হও।


কেটে যায় একটা বসন্ত দুরন্ত ঘুমে 

অবসর বাঁধা পড়ে প্রেম কায়েমের ধুমে 

বাড়ন্ত প্রেম যেন বরাবরই বাধাহীন, রাখে না ঋণ 

সময়ের সাধ লুটে ইচ্ছে স্বাধীন।


‘মে’তে এসেই মানুষ হবো 


একটা দিনেই মানুষ হবো আন্দোলনের আনন্দ বিলিয়ে, 

শ্রমিক তোমার সংগ্রামের শরিক হব 

তোমায় বঞ্চিত করার অবাধ্য চিত্ত নিয়ে। 


৮ ঘন্টা কাজ, ৮ ঘন্টা বিশ্রাম 

রবার্ট ওয়েনের এই তত্ত্ব কখনো কি হবে সত্য? 

কোথায় জমে শ্রমিক ভাইয়ের শ্রমের মাহাত্ম্য 

দেহ যেন মেশিন প্রায়, ২৪ ঘন্টাই ঘাম 

শ্রমই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠত্ব তবু শ্রমিক তোমার নাম। 


ছিয়াশি থেকে পঁচিশ 

রক্ত ঝরা প্রাণের হিসেব কোথায় রাখিস 

শ্রমিকের শীতল রক্ত দেখেও 

মুখ লুকিয়ে হাসিস 

দুনিয়ার দুর্দিনে আবার তারেই কেন ডাকিস? 


অধিকারের অধিক দিয়ে 

চাঁদায় হরন চলে 

জালিমের পতন লেখা আছে 

মজলুমের ওই মেহনতের তলে। 


কত কত অভিযোগ, লুণ্ঠিত হয় ইজ্জত 

অসহায় শ্রমিক, অচর্চিত ফুরসত

রোজ চলে মেহনতি মানুষের মৃত্যুর উৎসব 

কোথাও কি থামে তাতে মানুষ হবার মিথ্যে কলরব? 

শ্রম বিক্রি হয় দুমুঠো ঠান্ডা ভাতে

কান্না শুকিয়ে যায়, কি এমন হয় তাতে 

আমরা কিন্তু মানুষ হয়েছি ‘মে’ এর প্রভাতে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

3 মন্তব্যসমূহ

  1. গুলতেকিন কোবরা সুলতানাশুক্রবার, ০২ মে, ২০২৫

    মকলু ,কে এই নতুন কবি?

    উত্তরমুছুন
  2. ফারিহা নূরের "বাড়ন্ত প্রেম" কবিতাটি এক নবীন, সদ্য বিকশিত প্রেমের সূক্ষ্ম অনুভূতিগুলোকে আবেগময় ভাষায় প্রকাশ করেছে। কবিতায় প্রেমের সূচনা, বিকাশ এবং তার অন্তর্নিহিত টানাপোড়েনের চিত্র ফুটে উঠেছে। কবি প্রেমকে তুলনা করেছেন নিষ্পাপ ফুলের সৌন্দর্য ও বৃষ্টিস্নাত পাতার সতেজতার সঙ্গে। প্রেম যেন ধীরে ধীরে বাড়ে—তবে তা কোনো পূর্বপরিকল্পিত পথে নয়, বরং এক অপরিকল্পিত নগরীর মতো, যেখানে নিয়মের চেয়ে অনুভবের প্রবাহ বেশি প্রাধান্য পায়।

    প্রেমের এই বাড়ন্ত রূপটি শুধুই কোমল নয়, তাতে আছে ঝড়ের মতো আবেগের অভিঘাতও। বাহ্যিকভাবে শান্ত ও কোমল মনে হলেও, অভ্যন্তরে চলে প্রবল আবেগের বিস্ফোরণ—যা প্রেমকে করে তোলে আরও বেশি জীবন্ত ও জটিল। কবি বলেন, এই প্রেম বাধাহীন, ঋণমুক্ত—যা ইচ্ছের স্বাধীনতায় নিজেকে প্রসারিত করে।

    সমগ্র কবিতায় প্রেমকে জীবনের সঙ্গে জড়িত একটি ধারাবাহিক এবং স্বাধীন গতি হিসেবে দেখা হয়েছে। কবিতাটি প্রেমের একটি স্বতঃস্ফূর্ত, দুরন্ত ও গভীর অনুভবকে তুলে ধরে, যেখানে প্রেম কেবল আবেগ নয়, একধরনের জীবনদর্শন।

    উত্তরমুছুন

অমার্জিত মন্তব্য করে কোনো মন্তব্যকারী আইনী জটিলতায় পড়লে তার দায় সম্পাদকের না৷