গতরাতে দ্রুত ঘুমোতে যাবার ফলস্বরূপ আজ সকাল সকাল ঘুম ভাঙলো৷ যদিও বিছানা ছাড়তে নারাজ৷ এর মধ্যেই জাদুর বাক্সে টুং— নোটিফিকেশন এলো! কী আশ্চর্য, সকালের উপহারস্বরূপ লিটলম্যাগের সফ্টকপি এসে হাজির! ‘একালের কবিকণ্ঠ’— সুবীর সরকার সংখ্যা! এখনো ছাপা হয়নি৷ দ্য লাস্ট প্রুফ— কু ঝিক ঝিক চলমান৷ আমার সকালপাঠের রুটিনে আজ এসে পড়লো এই কপিটি! আর পড়তে শুরু করলাম,
৫৪ ছুঁতে চলা জীবনে অগণন মানুষের সঙ্গে দেখা হয়েছে। তাদের অনেকেরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি নেই। সমাজের উচ্চ পর্যায়ে ঘোরাঘুরি নেই। কিন্তু এই পৃথিবীর বিশ্ববিদ্যালয়ের তারাই কিন্তু সেরা ছাত্র। এই সব মানুষেরা আবার আমার শিক্ষক। আমার অনুসন্ধানী হয়ে ওঠা, লোকসমাজে মিশে যাওয়া, স্থানিক ইতিহাসে আগ্রহী হয়ে ওঠা এবং আমার জীবনবোধ নির্মাণ বিনির্মাণে এই মানুষদের কাছেই আমার আজন্মের ঋণ। প্রতিটি মানুষ আসলে গল্পের খনি। প্রতিটি মানুষ হয়ে উঠতে পারেন আখ্যানের বিষয়।”(আমার কবিতাজীবন, আমার ভুবনজোত/ সুবীর সরকার)
এটুকু পড়ে ভাবছি, সুবীরদার জীবন যেমনটা দেখি আমি, লেখায়-যাপনে সমান, মানুষটা মায়াবী এ জগৎ ভ্রমণ করে চলেছেন দুচোখে প্রিয়তমের পয়গাম নিয়ে!
অভিমান্য পাল গৃহীত একটি সাক্ষাৎকার পড়লাম৷ সেখানে তাঁর কবিতাজীবনের পেছনে প্রেরণার অস্তিত্ব জিজ্ঞেস করা হলে কবি উত্তর দিচ্ছেন— “এই উত্তর জনপদ। নদী মাঠ লোকগান মানুষের অন্তহীন জীবনযাপন। এরাই আমার প্রেরণা।”
সরল স্বীকারোক্তি৷
এরপর জিজ্ঞেস করা হলো, “আপনার কাছে আপনার প্রিয় কবিতা কোনগুলি?”
এবারও শান্ত কবি৷ নির্লিপ্তভাবে উত্তর দিলেন, “কোনো কবিতাই নয়। আসলে আমি মনে করি আজ পর্যন্ত একটিও কবিতা লিখে উঠতে পারিনি আমি।”
পাঠক, অনুভব করুন৷ যতোটা সরলবাক্য পড়ে চলে গেলাম, এ বাক্যের ছায়া ততোধিক গভীর, স্থায়ী৷
কবিকে লেখা চিঠিগুলো (১৯৯৫—২০০৩) পড়ছিলাম৷ অগ্রজ সাহিত্যিকগণের লেখা চিঠিগুলোতে কী স্নেহ, কী প্রেম! কত ভালোবাসা নিয়ে গৌরাঙ্গ মিত্র তৎকালীন নবীন লেখক সুবীর সরকারকে বলছেন—
সুবীর প্রকৃতপক্ষে একটা পাগল। ভাবপাগল। কবিতাপাগল। সেইজন্য সুবীরকে ভুলে যাওয়া বড় জোর সাময়িক হতে পারে। চিরতরে নয়।
একগুচ্ছ চিঠির পরে পাঠ করলাম জীবনপঞ্জি আর গ্রন্থপঞ্জিও৷ মনে হলো, জীবনপঞ্জি ও গ্রন্থপঞ্জিকে আরেকটু পূর্ণতা দিলে বোধহয় ভালো হতো৷
এতকিছু পড়তে চাইনি শুরুতে৷ কিন্তু লোভ সংবরন করতে পারলাম কই! সম্পাদকীয়, গুচ্ছকবিতা ও প্রবন্ধগুলো অপঠিত রইলো, যা সুবীর সরকারের সাহিত্যকীর্তিকে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করেছে বলেই আমার ধারণা৷ ‘একালের কবিকণ্ঠ’ প্রকাশ হোক, তারপর পত্রিকা হাতে নিয়ে সকৌতুহলে রয়ে সয়ে পড়বো; লোভাতুর প্রেমিকের মতো নয়৷
নদীতে ভেসে আসা কাঠের বন্দুক।একজন পুরোনো মানুষের সাথে ঘুরে ফিরে দেখা হয় জল ও জঙ্গলে শুনি পাখির শিস।দূরে চলে যাচ্ছে ক্রমে খড়মের শব্দ।(বন্দুক)
দিনহীনের দিনলিপি
২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১
10 মন্তব্যসমূহ
‘সাত সকাল‘ আছে কিন্তু ‘ছয় সকাল‘ কিংবা ‘আট সকাল‘ নেই কেন কবি?
উত্তরমুছুনএই মন্তব্যটি একটি ব্লগ প্রশাসক দ্বারা মুছে ফেলা হয়েছে।
উত্তরমুছুনহে মহান সম্পাদক, আপনার সুখ্যাত পত্রিকা দেখে ধন্য হলাম।
উত্তরমুছুনকোথায় গেলি বিষ্ঠামাথার
মেধাবীদের দল!
কেমন মজায় খাচ্ছিস এখন
স্বাধীন গাছের ফল?
তোদের মাথায় মেধা যে নেই
বুঝালো তোদের বাবা!
মাহফুজ তোদের চালিয়েছিলো
মারতে দেশে থাবা।
খুব লাফিয়ে বলেছিলি
স্বাধীন দেশে রবি!
রাম সাম আর যদু মধু
হোমরা চোমরা হবি।
কোথায় এখন ভাব দেখানো
সমন্বয়ক তোরা?
বুঝলি এখন তোরা শুধুই
আড়াই লাফের ঘোড়া!
তোদের মাথায় লাউয়ের ফলন
সত্যি ভালো হবে,
কি আর করা গর্ধবের পাল
চল খামারে তবে!
মুরোদ কি আর আছে তোদের
সত্যি স্বাধীন হতে!
পারবি কি রে চক্রান্তের
উচিৎ শিক্ষা দিতে?
আবু সাঈদ ওদের হাতেই
খুন হয়েছে জেনে!
কুচক্রিদের গোলাম হয়ে
সবাই নিলি মেনে।
মুগ্ধ কিন্তু সব বুঝেছে
যার সত্যি মেধা ছিলো,
স্টাটাসে সাবধান করায়
জীবনটা সে দিলো!
তোদের তো সেই মুরোদই নেই
বিষ্ঠাভরা মাথায়!
মেধাবী তো দুরের ব্যাপার
বুঝলি বাবার কথায়?
লজ্জা যদি থাকে তোদের
সত্যিকারে কিছু,
গুড়িয়ে দিয়ে চল এগিয়ে
হোস না রে আর নিচু!
এবার যারা বুঝে গেছিস
কখন ভালো ছিলি!
সুখে থেকেও ভুতের কিলের
পিঠটা পেতে দিলি।
পিঠ সামলে আবার তোরা
মাথা উচু করে,
গুড়িয়ে দিয়ে উঠে দাঁড়া
যাস না রে আর পরে।
জেন জি মানে জানোয়ার নয়
প্রমাণ তোরাও দে!
দেশটা তোদের রক্তে কেনা
তোরাই বুঝে নে।।
মাকসুদা সুলতানা ঐক্য
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
পূজায় তখন পুলিসের পাহারা লাগতো না।
উত্তরমুছুনবদলীর চাকরির সুবাদে আব্বা যেখানেই যান না কেন, বিশেষ করে বিজয়া দশমীতে আলমডাঙ্গায় যেতামই। খুব মজা হতো। বন্ধুদের সাথে ‘ঠাকুর দেখে’ বেড়াতাম আর সন্ধ্যের পর বাড়িতে বাড়িতে ঘুরে নানান মিষ্টান্ন ভক্ষণ চলতো। অসীম শিখিয়ে দিয়েছিল ডান হাতে ‘জলে’র গ্লাস ধরতে হয়। অন্যদের দেখাদেখি নিখুঁত ভাবে প্রণামও করতাম। নারকেলের নাড়ু পেতাম প্রায় প্রতি বাড়িতেই। খেতে খেতে আর খেতে না পারলে পকেটে ভর্তি করতাম।
রতনদের বাড়িতে থাকতাম। বোধন থেকে বিসর্জন - পুরো পূজা জুড়েই ওঁদের বাড়িতে মিঠাই মণ্ডা পাওয়া যেত। রতনের মা খুব আদর করে সেসব খাওয়াতেন। এমনও হয়েছে, থালায় (আমরা তখনো প্লেট বলতে শিখিনি) ভাত তরকারি মাখিয়ে একগাল আমাকে আরেকগাল রতনকে খাইয়েছেন। আমাদের দুজনেরই বয়স তখন ১৩/১৪।
উত্তমের চেহারা ছিল নন্দদুলালের মতো। তবে নন্দের মত কৃষ্ণবর্ণের নয়; ফর্সা, নাদুস নুদুস, মায়াভরা। মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি হিসাবে ওকেই সামনে রাখতাম। ওকে দেখলে পাড়ার মা মাসিরা গ’লে যেত। মিষ্টি কিছু ধরে দিত। আর আমি ছিলাম নীরব খাদক।
পূজা ওঁদের আর মজা আমার।
উত্তম, অসীম, রতন, স্বপন, লাল্টু, আমি … হাফপ্যান্ট পরা শিশুরা… বাড়ি বাড়ি বিজয়ার সন্ধ্যায় প্রণাম করে পকেট ভর্তি নাড়ু, সন্দেশ নিয়ে ফিরছি। মনে হয় এইতো সেদিনের কথা !
রতনের সাথে কাকিমার বাপের বাড়ি মানে রতনের নানাবাড়ি ফরিদপুরেও বেড়াতে গেছি। রতনরা নানাবাড়ি বলতো না। বলত দাদুবাড়ি। মুসলমান হিসাবে বড় কোন পার্থক্য দেখিনি। রতনও আমাদের কুমারখালির বাসায় বেড়াতে এসেছে। হিন্দু মুসলমানের কোন প্রকাশ্য দুরত্ব সেই শিশু বেলায় আমরা কখনো বুঝতে পারিনি।
খুব অল্প বয়সে কাকিমা মারা গেছেন। তাঁর কথা মনে হলে এক আদর্শ মাতৃমূর্তি মনের পর্দায় ভেসে ওঠে। আপনারা এই যে দশভূজা দুর্গাকে দেখেন মণ্ডপে, আমার কাছে ‘মা দুর্গা’ ছিলেন তিনিই।
উত্তম স্বপন চলে গেছে ভারতে। রতন অসীম লাল্টু বেঁচে নেই। কিছুই আর আগের মতো নেই। দেশটা চোখের সামনে বদলে গেছে। শিশুরা আজো আমাদের মতো বিজয়ায় বাড়ি বাড়ি যায় কি না জানি না।
তবু আশা করি, পুলিসি পাহারা ছাড়াই একদিন আমার দেশে আবার পূজা হবে। আমাদের নিজ নিজ ধর্ম প্রতি মুহুর্তের খণ্ড খণ্ড জীবনকে এমন ভাবে প্রশান্ত ও আলোকিত করবে যে, এমনকি যারা কোন ধর্মই পালন করে না, তারাও নিশ্চিন্ত আনন্দে দিন কাটাবে।
যারা ফেসবুকে খেলাফত চাইয়া জিহাদ করতেসে, তাদেরকে অযথা বুঝাতে যাবেন না। মুরতাদ ট্যাগ দিবে। তারচেয়ে বরং তাদের সবাইকে একটা গ্রুপে এড করে জাস্ট একটা প্রশ্ন করবেন, ‘ভাই, আপনাদের খলিফা কে হবে?'
উত্তরমুছুনদেখবেন, একজন বলবে মামুনুল হক, আরেকজন বলবে চরমোনাই পীর, আরেকজন বলবে আহমাদুল্লাহ, এমনকি সুন্নী পন্থি কেউ হলে সে তাহেরির নামও সাজেস্ট করবে।
তারপর দেখবেন তারা নিজেরাই লাগালাগি করতেসে। একে অপরকে বাজে ভাষায় গালি দিচ্ছে। আপনাকে আর কিছু করতে হবে না। আপনি শুধু দেখবেন, এক খিলাফতকামী ভাই আরেক খিলাফতকামী ভাইয়ের বিরুদ্ধে কীভাবে জিহাদ করতেসে।
সুন্দর একটি লেখা
উত্তরমুছুনলেখককে ধন্যবাদ , সম্পাদককে চুমু😘
প্লিজ টুনি মকলুকে 😘 দিওনা আর
মুছুনধর্ম যার যার তুমি শুধু আমার।
আমার বড়ছেলে আজকে আমাকে জিগাস করলো, "আব্বো মুক্তিযুদ্ধার পরেই তো তোমরা রেমিটেন্স যুদ্ধা। নাকি?" আমি বললাম, হ। কেনো কি হইছে? সে বললো, “তাইলে তোমাদের টাকায় দেশে পদ্মা সেতু হইছে, রেলগাড়ি হইছে, চট্টগ্রামে গাড়ি চলার গুহা হইছে। ইলিশ কেমনে ভারতে গেল? ইলিশ তো সুইজারল্যান্ডে আসার কথা"
উত্তরমুছুনকি আর বলব। আমি মনে করি আমাদের হক মারা হইছে। গতমাসে কামরুজ্জামান একটা কথা বলছিল, যে মাছ ভারতে যায়, সেই মাছ প্রবাসীদের জন্য গিফট পাঠানো উচিত। কারণ প্রবাসীদের টাকায় দেশ চলে। সেদিন কামরুজ্জামানকে ছ্যাঁচড়া ভেবে রাতের খানা দেই নাই। আজকে বুঝলাম তার কথাই ঠিক।
ওসমান গণি
সুইজারল্যান্ড প্রবাসী
আজ শুক্রবার!
উত্তরমুছুনপ্রতি শুক্রবার একজন ভিক্ষুক আসে আমাদের বাড়িতে, আম্মু তাঁকে খালা বলে ডাকে। গত শুক্রবার আম্মুকে নাকি বলে গেছিলো এই শুক্রবার ভাত খাবে, বইকচু দিয়ে মাছের তরকারি খাবে, বহুদিন মাছ খায়না বিশেষ করে মাছের মাথা।
আম্মু চার প্রকার তরকারি করছে সাথে বইকচু দিয়া বড় কাতলা মাছ,,
আব্বু আর ভাই নামাজ পড়ে আসলো, আমরা রেডি এখন ভাত খাবো কিন্তু আম্মু খাইতে দিচ্ছে না। আমি বললাম খাইতে দিচ্ছ না কেন? আম্মু কয় আমার খালা আসুক তারপর সবাইরে ভাত দিবো।।
আধঘন্টা পর আম্মুর সেই খালা আসলো
আব্বু বললো দেও এবার খালা আসছে।খালারেও দেও আমাদেরও দেও খাইতে। উনি শুনে কান্না করে দিছে, যে আমরা সপরিবার অপেক্ষা করতেছি তাঁর জন্য। মাছের মাথাটা যখন উনার পাতে দিলো হাউমাউ করে কেঁদে দিলো। আর বলে কতদিন খাইনা। উনারে খাইতে দিয়া তারপর আমাদের খাইতে দিলো আমার আম্মায়।।
আমার আম্মার মনটা সত্যি অনেক পবিত্র
সাম্য রাইয়ান ভাইয়া আপনি আমার আম্মার জন্য দোয়া রাইখেন❤️❤️
ওয়াও
উত্তরমুছুনসো বিউটিফুল
সো এলিগেন্ট
সো নাইস
অমার্জিত মন্তব্য করে কোনো মন্তব্যকারী আইনী জটিলতায় পড়লে তার দায় সম্পাদকের না৷