New

শ্বেতপত্র

শ্বেতকথা / সম্পাদকীয়


আর নিভে থাকা নয়, জমে থাকা নয়, দুর্দান্ত শক্তিতে নড়েচড়ে উঠেছি; প্রবল উত্তাপে জ্বলেছি ও জ্বালাচ্ছি। বৈশ্বিক চোখে দেখছি, বিশ্বশ্রোতা হয়ে শুনছি।
আমরা পড়তে চাই
আমরা লিখতে চাই
মুক্তচিন্তার বিকাশ ঘটাতে চাই
এ প্রত্যয় নিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু হয় ২০০৯ সালে। এরই মধ্যে অর্জন-বর্জন, নিন্দিত-নন্দিতের ধারাপাত স্বল্প হলেও পঠিত হয়েছে- হচ্ছে। পেছনে পড়ে থাকা নয়- পূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রত্যয়ে, অনুভূতি আর চেতনার সাম্রাজ্য সৃষ্টির ল্েয শ্বেতপত্র বদ্ধপরিকর।

দুই
এদেশের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি মানবাধিকার পরিস্থিতি, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কঠিন সময় অতিক্রম করছে। মানবাধিকার সংগঠন অধিকার এর মহাসচিব এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আদিলুর রহমান খান এর মতে, ‘স্বাধীনতার পর থেকে প্রতিটি সরকারের আমলেই মানবাধিকার পরিস্থিতি খারাপ থেকে খারাপতর হয়েছে। যা একটি ভয়াবহ অবস্থার দিকে বাংলাদেশকে ধাবিত করছে। পুলিশ বাহিনীটাই তৈরি হয়েছিল ব্রিটিশ উপনিবেশিক শক্তির লাঠিয়াল হিসেবে। যা পাকিস্তানের নয়া উপনিবেশিক শাসনামলেও বজায় থেকেছে, আর সাফল্য বা উপযোগীতার কথা বললে নগন্য থেকে নগন্যতর। আমাদের দেশে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনটিরই অবস্থান মানবাধিকারের েেত্র সহায়ক নয়। পুলিশ নিয়ত রিমােেন্ড নিয়ে মানুষকে নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত। আমিন বাজারে ছয়জন ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তাদের ভূমিকা ছিল। কোম্পানীগঞ্জে দেখা গেছে পুলিশের মধ্যে যারা অপরাধী, তারা একজনকে জনগনের মধ্যে ছেড়ে দিয়ে পিটিয়ে হত্যায় উদ্বুদ্ধ করছে। এর বাইরে তো আমরা র‌্যাবের কর্মকান্ড দেখছি। যা আমাদের আবারো স্বাধীনতার অব্যবহিত পরের জাতীয় রী বাহিনীর কথাই মনে করিয়ে দেয়।’

বর্তমান মতাসীন সরকার খসড়া স¤প্রচার নীতিমালা করার মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী কায়দায় মিডিয়ার কণ্ঠরোধের ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করতে চাইছে। এ ল্েয তারা দৃঢ় পদেেপ এগিয়ে চলেছে। প্রস্তাবিত স¤প্রচার আইনের প্রধান ধারাসমূহ হল:
১. এই আইন মতে রেডিও-টেলিভিশনে কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রকাশ পায় এমন অনুষ্ঠান প্রচার করা যাবে না।
২. বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ায় এমন কোন টক-শো প্রচার করা যাবে না।
৩. জাতীয় আদর্শ বা জাতিয় নেতাদের সমালোচনা করা যাবে না।
৪. কোনো অনুষ্ঠানে জাতির জনকের সমালোচনা করা যাবে না।
৫. কোনো অনুষ্ঠানে কোনো ব্যক্তির সমালোচনা করা যাবে না।
৬. জাতিয় আদর্শ ও ল্েযর সমালোচনা করা যাবে না।
৭. সামরিক বা সরকারী কোনো তথ্য ফাঁস করা যাবে না।
৮. আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায়, এমন কোনো তথ্য প্রচার করা যাবে না।
৯. বন্ধুপ্রতিম কোনো রাষ্ট্রের সমালোচনা করা যাবে না।
১০. নারী পাচার, পতিতাবৃত্তি, ধর্ষণ ইত্যাদি বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার করা যাবে না।
১১. চুমুর দৃশ্য প্রচার করা যাবে না।
১২. বিদ্রোহ বা প্রতিবাদের কোনো খবর বা অনুষ্ঠান প্রচার করা যাবে না।
১৩. অপরাধীদের কর্মকান্ড নিয়ে কোনো অনুষ্ঠান প্রচার করা যাবে না।
১৪. রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ, সরকারী প্রেস নোটস, বিজ্ঞপ্তি এবং জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানগুলো প্রচার করতে বেসরকারী স¤প্রচার মাধ্যমগুলো বাধ্য থাকবে।
(তথ্যসূত্র: সাম্পাহিক বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১১ খ্রি.)

প্রস্তাবিত স¤প্রচার নীতিমালাগুলো বাস্তবায়ন হলে প্রচার মাধ্যম বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ স¤প্রচারে মারাতœকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে; পঙ্গু হয়ে পড়বে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া। ইলেকট্রনিক মিডিয়া তখন শুধুমাত্র নাচ-গান, নাটক-সিনেমায় সীমাবদ্ধ হয়ে পড়বে। অপরদিকে সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে পরিণত করবে দুর্নীতি-স্বৈরাচারের গান্ডীব হিসেবে। এই প্রস্তাবিত স¤প্রচার আইন ফ্যাসিবাদী শাসন ও শোষণেরই নামান্তর। তাই মুক্তিকামী-গণতন্ত্রকামী প্রতিটি মানুষের এই ফ্যাসিবাদী নীতির বিরুদ্ধে বিস্ফোরিত হওয়ার এখনই সময়।

তিন
গত কয়েকদিন আগে সৌদি আরবে ঘটে যাওয়া আট বাঙলাদেশি শ্রমিক যুবকের শিরচ্ছেদ কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। একবিংশ শতাব্দিতে এসে বিশ্ব মানব সমাজ-সভ্যতা যখন বিজ্ঞান-প্রযুক্তির অগ্রগতিতে থৈ থৈ করছে তখন মধ্যযুগীয় বর্বর কায়দায় আল্লার আইনের নামে নৃশংস হত্যাকান্ড সংঘটিত হল। আমরা এই ঘৃণ্য বিচার ব্যবস্থার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

  1. মোঃ মীর হাবিবুব রহমানরবিবার, ২৪ জুলাই, ২০২২

    এই পত্রিকার সমস্যা কি? এই পত্রিকার সম্পাদক লেখক সবাই মূর্খ অশিক্ষিত নাকি,কারো কোন বানানের ঠিক নাই৷সবাই একজোট হয়ে বাংলা বানানের গোয়া মেরে দিচ্ছে??কেন???কারন কি????সম্পাদকীয়র বানানও যাচ্ছে তাই????এই পত্রিকার মিশ কি বাংলা বানানের গোয়া মেরে দেয়া?

    উত্তরমুছুন

অমার্জিত মন্তব্য কাম্য নয়