New

শ্বেতপত্র

জলজ রোদ/সুজনা ইয়াসমিন




আমার জীবন ধুয়ে ধুয়ে পড়ছে– সুখের ঋণ।


ভাবনাবৃত্তের অমোঘ বিধানের কাছে ঠুনকো, অভাবী কাঠুরের রক্তাক্ত মাংসল পেশী! 



ওপারে আমার মায়ের চিবুকের কাছাকাছি ক্যালকুলেটরে হিসেব হত সংসারের আয়-ব্যায়।


মা বড্ড যত্নে আঁচলে বেঁধে  রাখত- বাবার মায়ার আয়ুর হাত ।



অথচ

 মা 

অপচয়ের হিসেব রাখা হয়ে ওঠে নি কত কিছুতে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

5 মন্তব্যসমূহ

  1. "জলজ রোদ" কবিতাটি একধরনের আত্মঅনুসন্ধানী ও পারিবারিক স্মৃতিচিত্রের নিঃশব্দ অথচ গভীর বয়ান। এখানে কবি ব্যক্তিগত জীবন ও পরিবারের মধ্যকার অভ্যন্তরীণ টানাপড়েনকে এক আশ্চর্য কাব্যিক সংবেদনশীলতায় তুলে ধরেছেন।

    বিষয় ও ভাববিশ্লেষণ:

    প্রথম পঙক্তিতেই ("আমার জীবন ধুয়ে ধুয়ে পড়ছে– সুখের ঋণ।") আমরা একটি বেদনামিশ্রিত স্বীকারোক্তি পাই। "সুখের ঋণ" একটি চমৎকার রূপক, যা বোঝায় জীবনের প্রাপ্তির চেয়ে অপূর্ণতার ভার অনেক বেশি—কবি যেন ক্রমাগত বেঁচে থাকাকে একটি দেনার মধ্যে দেখছেন। এই ঋণ শুধুই অর্থনৈতিক নয়, মানসিক ও আবেগিকও বটে।

    "ভাবনাবৃত্তের অমোঘ বিধান"– এখানে আত্মজিজ্ঞাসা ও নিয়তির অনিবার্যতাকে বোঝানো হয়েছে, যার তুলনায় "ঠুনকো, অভাবী কাঠুরের রক্তাক্ত মাংসল পেশী" যেন জীবন সংগ্রামের কষ্টার্জিত বাস্তবতাকে তুলে ধরে। এই পঙক্তিতে দারিদ্র্য, ক্লান্তি এবং অনিশ্চয়তার বোধ তীব্রভাবে ফুটে ওঠে।

    এরপর কবি চলে যান মাতৃচরিত্রের স্মৃতিতে। মায়ের কষ্ট, হিসেব-নিকেশ, সংসার চালানোর চেষ্টা, এবং ভালোবাসা– সবই সংক্ষেপে অথচ অত্যন্ত সংবেদনশীলভাবে উঠে এসেছে:

    > "মা বড্ড যত্নে আঁচলে বেঁধে রাখত- বাবার মায়ার আয়ুর হাত।"

    এই বাক্যে 'মায়ার আয়ুর হাত' একটি কাব্যিক মেটাফর, যেখানে মা বাবার প্রতি ভালোবাসাকে রক্ষা করার প্রতীকী চেষ্টা করেছেন। আঁচল এখানে মায়ের মমতা ও রক্ষার প্রতীক।

    কিন্তু কবি তীব্র বেদনায় স্বীকার করছেন:

    > "অপচয়ের হিসেব রাখা হয়ে ওঠে নি কত কিছুতে।"

    অর্থাৎ, জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অপচয়—সম্ভবত আবেগ, সময়, আত্মত্যাগ—যার হিসেব কখনো রাখা হয় না, সেই অনাকাঙ্ক্ষিত ক্ষয় নিয়েই কবির এই দীর্ঘশ্বাস।

    শৈলী ও ভাষা বিশ্লেষণ:

    সুজনা ইয়াসমিনের কবিতার ভাষা সরল কিন্তু গভীরতাসম্পন্ন। প্রতিটি চিত্রে রয়েছে অনুভবের বৃষ্টিধারা ও বাস্তবতার কষ্টকর ছায়া। কবি প্রতীক ও রূপকের মাধ্যমে বাস্তব ও কল্পনার সংমিশ্রণ ঘটিয়েছেন, যা কবিতাটিকে একটি জলজ, ধূসর আবহ তৈরি করতে সহায়তা করেছে।

    “জলজ রোদ” – এই শিরোনামটিই একটি অক্সিমোরন। জল ও রোদ পরস্পরবিরোধী অথচ সহাবস্থানের ভাব এনে দেয়। এতে জীবনের দ্বৈততা, অভাবের মধ্যে আলো খোঁজার প্রচেষ্টা কিংবা ক্ষয়ে যাওয়া আনন্দের ছায়াচিত্র পাওয়া যায়।

    বাক্য গঠনে কখনও সরলতা, আবার কখনও জটিল ভাব-সংকেতের ব্যবহার আছে, যা পাঠককে কবিতার অনুভব করতে সাহায্য করে।

    "জলজ রোদ" একটি আত্মিক, স্মৃতিময়, এবং জীবনসংগ্রামকে উপজীব্য করে লেখা গভীর অনুভবসঞ্জাত কবিতা। এতে কবি শৈল্পিক গদ্যছন্দে সামাজিক বাস্তবতা, পারিবারিক আবেগ, এবং আত্মচিন্তার মিশ্রণ ঘটিয়েছেন। এই কবিতাটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জীবনের অনেক হিসেব হয়তো ক্যালকুলেটরে ধরা পড়ে, কিন্তু ভালোবাসা ও বেদনাগুলো থেকে যায় হিসেবের বাইরে।

    উত্তরমুছুন
  2. সান্নিধ্য মোকলেছরবিবার, ০৮ জুন, ২০২৫

    কবির পেমে পরে গেলাম উফ্

    উত্তরমুছুন
  3. বলবোনা

    সবার জন্য ইদ মরাবক। আর সম্পাদকের জন্য i love you, kiss kiss kiss kisss kisss kissss Kissss kisssssssss
    উত্তরমুছুন

    উত্তরমুছুন
  4. আগামীকাল জুম্মা নামাজের পর সবাই রাজুতে আসেন। আজরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল হবে। বিক্ষোভ মিছিল শেষে আমেরিকার দূতাবাস ভাঙা হবে। সবাই দলে দলে যোগ দিন।

    উত্তরমুছুন

অমার্জিত মন্তব্য করে কোনো মন্তব্যকারী আইনী জটিলতায় পড়লে তার দায় সম্পাদকের না৷