মোকলেছুর রহমানের তিনটি কবিতা

বিষন্ন দুুপুর

ঘামে সিক্ত—

মাছের মসৃণ শরীর যেন

স্নানরত।

অতি জল, অতি খরা ;

মানুষ মাছেদের শহরে।

জল বায়ু সম্মেলনে  লাভ কী বলুন?

আমি পৃথিবীর সমুদয় আকাক্ষার উর্দ্ধে উঠে

বসে পড়ি, কমাতে অনেক কিছু, 

তথাপি দিনে-দিনে ব্যস্ততা জ্যামিতিক হয়। 

দুপুর গড়িয়ে আসে দুপুর

সন্ধা - সকাল নেই,

দাঁড় কাকের স্বরে পূর্নোৎপাদিত 

বিষন্ন দুপুর।

হাওয়ার শব্দে মৃত্যুর যমজ ভাই টা-টা দিয়ে 

স্বাগত  জাগরণ। 

পাউরুটির তাওয়ার আবেশ, 

—ধুর উষ্ণ জীবন! 

সব বৃক্ষ মহোদয় হয় না

সব বৃক্ষ তো আর মহোদয় হয় না

বিষ বৃক্ষও  হয়!  

আপন রন্ধে অক্সিজেন শুষে,

যাপিত পরিপার্শ্বে দৃষ্টির অর্ন্তরালে ফনা তুলে।

জিগাতে না ফোটে ফুল, না ঝোলে ফল  

আরও বনষ্পতি হয়। 

তথাপি অবিরাম নত-শিরে শ্রদ্ধা তোমায়,

চিরায়ত স্বভাবে ছায়া তো দাও। 

ঘষা রঙের মত ফ্যাকাশে

কবেই বোটা খসে ঝুলে আছ ঐ ডালে

বৃক্ষ মহোদয় আর তোমায় ফিরিয়ে নেবে না 

দুলবি না শাখায়, 

যৌবনের প্রচন্ড-দুপুরে—

প্রস্ফুটিত বিভা এঁকে দিলে পৃথিবীর চোখে, 

সুবাসে ভরালে নাসারন্ধ্র

রূপ-মহিমা রেখেছো  যে সযত্নে!  

সঞ্চিত রসবোধে,

শেষটা কী করুণ! 

রূপ-রস বিলায়ে, কাগজের ফুল হয়ে,

এখন ঘষা রঙের মত ফ্যাকাশে ।

কবেই বোটা খসে ঝুলে আছ ঐ ডালে, 

স্বস্থানও ছেড়েছো অসংকোচে। 

শাখায় শাখায় নতুন কুঁড়ি 

রঙ্গীন ফুল, বৃক্ষ গৌরবে উজ্জ্বল।