বিশ্ব বই দিবস আজ, ২৩ এপ্রিল। সারা বছরই যাঁদের বই নিয়ে কাটে, তাঁদের কথা আলাদা। কিন্তু যাঁরা কালেভদ্রে বই পড়েন, তাঁরা অন্তত আজ যদি একটি বই হাতে তুলে নেন, তাহলেই বই দিবস সার্থক হয়ে উঠতে পারে।
শঙ্করলাল ভট্টাচার্যের চমৎকার একটি বই আছে, নাম 'দার্শনিকের মৃত্যু ও অন্যান্য প্রবন্ধ'। আছে সক্রেটিস থেকে বাৎসায়ন, বিবেকানন্দ হয়ে নিটশে, হেমিংয়ে হয়ে হর্হে লুইস বর্হেস। আছেন ত্রুফো, দালি, আছেন সিনেমার শেক্সপিয়র। টুকরো টুকরো ভাবনা দিয়ে গড়ে উঠেছে বইটি।
বই দিবসে বরং উল্লেখ করা যাক শঙ্করলালের এই বই থেকে একটি পৃষ্ঠা— ‘বইয়ের নিয়তি’৷ সকল পাঠককে জানাই, বিশ্ব বই দিবসের শুভেচ্ছা৷
বইয়ের নিয়তি
শঙ্করলাল ভট্টাচার্য
বই চুরিতে দোষ নেই এই ধারণা কোনো প্রকৃত পড়ুয়া চালু করেছে বলে মনে হয় না। কারণ আমি দেখেছি যে, কেউ ধার-করা বই পড়ে ফেললে সেটা ফেরত করে। না পড়লে দিচ্ছি-দেব করে চেপে যায়। দ্বিতীয়বার পড়ব বলে কেউ বই আটকে রেখেছে এমনটা শুনিনি। যারা আরেকবার পড়বে বলে বই আটকায় তারা আসলে সেটি একবারটিও পড়েনি।
তবে যারা বই পড়ে তারা যদি বই গায়েব করায় অভ্যস্ত হয় তাহলে কিন্তু সমূহ বিপদ। কারণ একজন প্রকৃত পড়ুয়া বই চাইলে তাঁকে মুখের ওপর না বলা মুশকিল। ফলে, তিনি বই ফেরত না দিলে এই ভেবেও মনকে স্তোক দেওয়া যাবে না যে, পড়া হয়নি তাই দেওয়ার নাম করছেন না। বস্তুত, আমি এমনও পড়ুয়ার পাল্লায় পড়েছি যিনি আমার থেকে ধার করা (এবং অবশ্যই ফেরত না করা) বই থেকে পরের পর উদ্ধৃতি দিয়ে তর্ক করা অভিভূত করে গেছেন আমাকে; সেই কঠিন মুহূর্তে আমি ভিতরে ভিতরে কাঁদছি বইটার কথা ভেবে, কিন্তু করবটা কী!
টাকা ধারের মতো বই ধারের বেলায়ও তামাদি গোছের কিছু আছে। বহুদিন টাকা ফেরত না করলে যেমন তা আর ফেরত দেওয়ার আওতায় থাকে না তেমনই বেশিদিন কেটে গেলে বই ফেরত দেওয়ার দায়ও ঘাড় থেকে নেমে যায়। পুরনো ধার আর দীর্ঘদিন আগে পড়তে দেওয়া বই ফেরত চাওয়া নাকি ছোটলোকোমি! এই তত্ত্বটা নিশ্চয়ই বই লেনদেনের কোনো অধমর্ণের উপস্থাপনা, কারণ যারা বই ফেরত দেয় না তারা বই ধার দেওয়া লোকদের মনে মনে শ্রেণিশত্রু জ্ঞান করে। কে জানে, মনে মনে তাদের হয়তো কিছুটা ঘৃণাও করে!
45 মন্তব্যসমূহ
ওগো ট্যাগারু সম্পাদক তুমি আমাকে এটা ট্যাগ করনি কেন 😭😭😭
উত্তরমুছুনতুমি প্লিজ প্লিজ প্লিজ ট্যাগ করো এখনি
স্বনামে মন্তব্য অথবা ম্যাসেনজারে অক দিন ব্যবস্থা নেয়া যাবে
মুছুনতুমি আলবালছাল লেখা ট্যাগ করতে করতে পাগল করে তোল ফেসবুকবাসীকে৷৷ তোমার ট্যাগের চোদনে সবাই অস্থির হয়ে ওঠে৷ অথচ যখন ভাল লেখা প্রককাশ করো তখন ট্যাগ করো না ৷ এটা এত সুন্দর লেখা প্রকাশ করেছ যা সবার জানা উচিত ছোটভাই ৷ এটা সবাকে ট্যাগ কর সবাইকে জানাও
উত্তরমুছুনজনাব মনোয়ার হোসেন আপনার কোন বন্ধুু যদি প্রতিদিন ভালোবেসে আপনাকে দাওয়াত দেয় বাড়িতে যে পদেরই রান্না হোক। যেমন ধরুন শাক- সবজি, ডাল, (আলু, বেগুন, শুটকি, সিদল, শুকতানি ইত্যাদির ভর্তা), হলেও দাওয়াত দেয় আবার পোলাও মাংস হলেও দাওয়াত দেয়। আর আপনি এমন বন্ধুর ডাল, সবজি, ভর্তার দাওয়াতে বির্বত হন, গাল-মন্দ করেন আর পোলাও মাংসের দাওয়াতে জিভে জল এনে বসে থাকেন। এ লজ্জা ও কষ্টে দাওয়াত দেয়া বন্ধ করলে খুশি হন। অন্য দিকে পোলাও মাংস রান্না হলে দাওয়াত না পেয়ে দাওয়াতের জন্য অনুনয়-আর্জি পেশ করেন, দুঃখে চোখের জল, নাকের জল, জিভের জল একাকার করে থাকেন এমন অবস্থায় আপনার বন্ধুর এর চেয়ে ভালো কিছু কিবা করতে পারে?
মুছুনআরে ছোটভাই তুমি যে একটা গাধা তার প্রমান তোমার প্রথম কথাতেই আছে ৷ বন্ধু কখনো প্রতিদিন দাওয়াত দেয় না৷ আর যদি কোন বন্ধুর বাড়িতে যদি পরতিদিন খাও তুমি তাহলে সেটা আর দাওয়াত থাকে না ৷ এত মোটা মাথা নিয়ে কবি সাজতে এসেছো ছোটভাই ৷
মুছুনতুমি বই পড় জীবন গড়
বই য়ের বিকল্প নেই জীবনে
ট্যাগ করা আর দাওয়াত দেয়া বা পড়ার আমন্ত্রণ জানানো একই বিষয়। আর আপনার মতো মাথাহীন লোক এমন কথা বললে আমার বলার কিছু নেই!
মুছুনবই পড়ি
উত্তরমুছুনজীবন গড়ি
বই জীবন সুন্দর করার প্রধান মাধ্যম
মুছুনপড়িলে বই
উত্তরমুছুনআলোকিত হই
আলোর বাতিঘর হচ্ছে বই
মুছুননা পডিলে বই
উত্তরমুছুনঅন্ধকারে রই
নিয়মিত বই পড়ে জীবনকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোতে নিয়ে যেতে হবে।
মুছুনমকলু এবার সুন্দর কাজ করিছিস
উত্তরমুছুনলেখা ভাল হয়েছে
ধন্যবাদ
মুছুনবাহ কি সুন্দর কবিতা
উত্তরমুছুনমকলু সাংবাদিকের জয় হোক
সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক হয়, সাংবাদিক নয়।
মুছুনরেশমি আক্তার বিষয়টি মনে রাখতে হবে।
ধন্যবাদ
প্রাণপ্রিয় বান্ধবী বললো শাকিব খান লাগতেসে মকলুকে!!! 😘😘
উত্তরমুছুনসে-ও পছন্দ করে আমিও পছন্দ করি মকলুকে ,,,
এখন কী করা যায়!
আমার ওগো সম্পাদককে নিয়ে এরকম কথা আমি কারো কাছে শুনতে চাই না না না ৷ দিস ইজ ফাস্ট এনড লাস্ট ওয়ার্নিং ৷ এরপর এরকম কমেন্ট করলে নীলা তোর চুলের মুঠি ধরে পিটাবো ৷
মুছুনটুনি আপনি ভদ্রভাবে কথা বলেন ৷ কাকে হুমকি দেন আপনি ? আমি কি কাউকে ডরাই ? ওয়ানিং কাকে দেন ? চড়ায়ে দাত ফেলে দিব
মুছুনওনার্নিং নয়
মুছুনপাকা কথা বললাম
তুই কে রে ? আমার ওগো সম্পাদকের সাথে তোর কি ? আমার মকলু কি তোর প্রেমিক ? তুই আমার পথের কাটা হলে ফল ভাল হবে না
তুই তুকারি করছিস কেন কুত্তি
মুছুনতোর চরিত্র আমরা সবাই জানি
তুই মকলুকে রূপের ফাদে ফেলেছিস
এইসব চরিএহীন নিচু মানের মেয়েদের তুমি ওয়েবসাইড থেকে ব্লক করে দাও ওগো সম্পাদক ৷ এসব নিচু মনমানসিকতার থাড ক্লাস মেয়ের সাথে আমি কথা বলতে চাই না
মুছুনতুই নিজে একটা শুয়োপোকা
মুছুনআমাকে থাডক্লাস বলিস কোন সাহসে
তুই একটা নুছন্যা ত্যানা, নাকের সিকন
মুছুনতুই মকলুর গু খা
মুছুন
মুছুনতুই মকলুর মুত খা
টুনি ধ্বংষ হ
মুছুননিপাত যা
মকলু তোকে পচন্দ করে না
ঘিনা করে
লেখা নিয়ে সুনিদিষ্ট ও গঠনমূলক মন্তব্য করেন, সম্পাদককে নিয়ে কথা না বললেও চলবে।
মুছুনএইসব চরিএহীন নিচু মানের মেয়েদের তুমি ওয়েবসাইড থেকে ব্লক করে দাও ওগো সম্পাদক ৷ এসব নিচু মনমানসিকতার থাড ক্লাস মেয়ের সাথে আমি কথা বলতে চাই না
মুছুনকাকে চরিএহীন বলিস তুই
মুছুনমকলু আমাকে ভালবাসে
সে কোনদিন আমাকে ব্লক করবে না
তোমাকে নিয়ে এসব কি শুরু হয়েছে ছোটভাই,, তোমাকে ত এতদিন ভাল ছেলে জানতাম কিন্তু এসব কি,,,তোমাকে নিয়ে মেয়েরা কি শুরু করেছে ? তুমি ঘর সামলাতে পারছ না ??
মুছুনপাঠকরা যদি অনেক বোঝানোর পরও বিষয় বর্হিভুত মন্তব্য করে। তাহলে আর কি?
মুছুনবই নিয়ে আলোচনা ঠিক আছে। কিন্তু বই দিবসের সাথে লেখাটা যায় না। আর বই চুরি বিষয়ক আলোচনার ভিন্ন সেটা এই বিষেষ দিবসে টেনে আনা ভালো লাগলো না। সম্পাদকের বুদ্ধি কম।
উত্তরমুছুনআপনি কোন লাট সাহেব হে আমার ওগো সম্পাদকের বুদ্ধি কম বলেন ? তার মাথাভরা শুধু বুদ্দি আর বুদ্ধি ৷৷৷বুদ্ধি না থাকলে সে এত উন্ন্ ত মানে ওয়েবসাইডের সাংবাদিক হতে পারতো???? এটুকু বুদ্ধি আপনার নাই??
মুছুনকে তুমি মিস্টি সুন্দরি৷ সেজন্যই তো তোমার বুদ্ধি হাটুতে৷ নাহলে আমার মত হ্যান্ডসামকে তুমি চিনতে পারলে না৷
মুছুনসাবধানে কথা বলবেন৷ আপনার কি আমার ওগো সম্পাদকের মতো লাউয়ের মতো বিশাল টাক আছে? না থাকলে রাস্তা মাপেন৷ চুলয়ালা গুফ্যালা৷
মুছুন
মুছুনও টুনির মা তোমার টুনি কথা শুনে না
মকলুর লগে ফিন্ডিং মারে আমায় চিনেনা
এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।
মুছুনমন্তব্য ডিলেট করেছ কেন ওগো সম্পাদক
মুছুনকি আর বলব দুঃখের কথা৷ বন্ধু বলে জানতাম যাকে সেই মকলু একদিন কল দিয়ে বলল, বাড়িতে আছিস?
উত্তরমুছুনবললাম, হ্যাঁ, কেন?
বলল, আমার কাব্যক্রন্থ বেরিয়েছে বিক্রি করতে যাবো।
বললাম, তোর লেখা আমার তো পাওনা, কিনব কেন?
মকলু বলল, আমার লেখাটা ফ্রি-ই দিচ্ছি ফেসবুকে পতিদিন সবাইকে ট্যাগ করে করে তুই খালি কাগজ ছাপার দামটা দিস।
বললাম, আমি বাড়িতে নেই! বাড়ি ফেরে কল দিব৷
আজ পযন্ত আর কল দেইনি ৷ ওকে দেখলে দূর থেকে পালিয়ে বেরাই ৷ আতংকে থাকি, কখন এসে বই ধরিয়ে টাকা চায়বে ৷ বন্ধুদের সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছি আমরা ৷ মেসেঞ্জার গ্রুপে সবাই সতর্ক থাকি ৷ মকলুকে কেউ দেখলে গ্রুপে লিখে দেয় ওদিকে যাওয়া যাবে না ৷ অনেয রাসতা দিয়ে যাই তখন ৷ মকলুর মত লেখকদের কারনে আজ বই আমাদের কাছে এক আতংকের নাম
তুই একদম সত্যি কথাটা বই দিবসে বলে ফেললি সিরাজুল ৷ মকলু ওর বই কেনার জন্য কতদিন আমার ইনবক্সে অনুরোদ করেছে ট্যাগ করেছে ৷ আমরা ওর বইয়ের যন্ত্রনায় পাগল ৷
মুছুনএক বই লিখে মকলু হাতির হোল হয়ে গেছে
মুছুন
উত্তরমুছুনদেশে এখন বুদ্ধিবৃত্তিক বন্ধ্যাত্ব বিরাজমান। দেশের শিক্ষিতসমাজ যখন ক্ষুদ্র ব্যক্তিস্বার্থ ও ক্ষমতার কাছে শর্তহীন আত্মসমর্পণ করে তখনই চিন্তার জগতে শূন্যতা ও অন্ধকার নেমে আসে। একেই বলে মূর্খকরণ প্রক্রিয়া!
বই পড়লে সুস্থ থাকা যায় না, সমাজে-রাষ্ট্রে অসঙ্গতি দেখলে অ্যাবনর্মাল হতে হয়। মূর্খ থাকলে যন্ত্রণা বা জ্ঞানের খোঁচা থাকে না।
উত্তরমুছুনমূর্খ থেকে সুস্থ থাকব। আমাকে বইপাঠক কিংবা জ্ঞানীর বক্তব্য বা ওয়াজ শোনা থেকেও মুক্ত থাকতে হবে।
একটা সময় আমি সবাইরে বই পড়ার পরামর্শ দিলেও এখন আমি আর কাউরে বই পড়তে বলি না।
উত্তরমুছুনবিনোদন হিসেবে বই পড়ার অভ্যাসটা ভালো না, বরং এই অভ্যাসটা আপনার রিয়েল লাইফ ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
সিনেমা বলেন, মাঠের খেলা বলেন বা ভিডিও গেমস, বিনোদন হিসেবে এইগুলা আপনার রিয়েল লাইফে ইফেক্ট ফেলে না। বাট বই পড়া জিনিসটা বিনোদনের সীমানা ছাড়াইয়া আপনারে রিয়েল লাইফে এসেও যন্ত্রনা দেওয়া শুরু করবে এবং ক্ষেত্রবিশেষে আপনাকে একা করে ফেলবে।
বই পড়ার অভ্যাসের সবচে বড় সাইড ইফেক্ট হলো, বই পড়া শুরু করার পর থেকে আপনি আর আপনার আশেপাশের দশজনের মতো করে চিন্তা করতে পারবেন না। আর দশজন যে হিন্দি গানে নাচে, আপনি সেই গানে নাচতে পারবেন না। আর দশজন আড্ডায় গসিপ করে যে মজাটা পাবে, আপনি সেই মজাটা পাবেন না।
ফলাফল হইলো, আপনি রিয়েল লাইফের মানুষের উপর থেকে ইন্ট্রেস্ট হারাইয়া ফেলতে শুরু করবেন। রিয়েল লাইফের লোকজনের হিপোক্রেসি আর মুখোশগুলো চিনে ফেলতে শুরু করবেন, ফলে আপনি একা হয়ে যাইতে শুরু করবেন।
বই পড়ার আরো একটা অসুবিধা হলো, বই পড়ার পর আপনি একটা অন্যায়রে সহজে সহ্য করে নিতে পারবেন না। তেল মারতে পারবেন না। সহমত ভাই সহমত বোন হতে পারবেন না। বরং আপনার ভেতরে তীব্র একটা প্রতিবাদবোধ কাজ করবে। আর দশটা মানুষ যে অধ্যায়টা মুখ বুজে সহ্য করবে, আপনি সেইটা পারবেন না।
ফলাফল? আপনার শত্রু সংখ্যা বাড়তে থাকবে। উচিত কথা বলা লোকজনরে সাধারণত আমাদের সমাজে অ্যারোগেন্ট হিসেবে দেখে, আপনাকেও তাই দেখবে।
খেয়াল করে দেইখেন, আপনার আশেপাশে নিরীহ বই পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের হেটার্স সংখ্যা আশ্চর্য রকমের বেশি।
শুধু তাই না, বই আপনার কল্পনায় যে জগতটা গড়ে দেয়, সেই জগতের সাথে আপনার রিয়েলিটি কন্টিনিউয়াসলি ফাইট করে যেতে থাকবে। আপনি একটা সময় কল্পনার মানুষগুলো বাস্তবে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করবেন।
কিন্তু আপনি পাবেন না।
আপনি হুমায়ূনের বই পড়ে বাকের ভাইকে ভালোবাসবেন। অথচ আপনি রিয়েল লাইফে দেখবেন মামুন সাহেব আছে, মুনা আছে, বদিও আছে। শুধু বাকের ভাইটা নাই।
পাগলের মতো খুঁজতে খুঁজতে আপনি একসময় ক্লান্ত হয়ে যাবেন। আপনার ভেতরে তৈরি হবে শূণ্যতা। আপনার মনে হবে, মামুন সাহেব তত আছে, বদিও বাস্তবে আছে, তাহলে বাকের ভাই থাকলে কী সমস্যা হতো? এই প্রশ্নের উত্তর আপনাকে কেউ দেবে না।
আপনি হিমু রূপার প্রেম দেখে মুগ্ধ হবেন, এবং সেই প্রেমকে বাস্তবে দেখতে চাইবেন। অথচ রিয়েল লাইফে আবিষ্কার করবেন, ঐ হিমু আর রূপা বাস্তবে এক্সিস্ট করে না। বাস্তবের হিমুদের এখন শাড়ি দেখার চে শাড়ি খোলার দিকে মনোযোগ বেশি আর বাস্তবের রূপারাও আজকাল আর একটা হিমুর সাথে প্রেম করে না, এদের হাতে হিমুর সংখ্যা এখন বারোটা।
আপনি কালবেলা পড়ে রাজনীতি করতে চাইবেন? অনিমেষ আর মাধবীলতার মতো বিপ্লব করতে চাইবেন, অথচ আপনি দেখবেন, দুনিয়াভর্তি এখন অনিমেষের সেই কাকা। অনিমেষরা দুনিয়াতে নাই, অথচ ওর কাকারা আবার দুনিয়াতে আছে, এই ভয়ঙ্কর সত্যটা একজন বইপড়ুয়াকেই সহ্য করতে হয়, বই না পড়া, অনিমেষকে না চেনা কাউকে কিন্তু এই যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে যাইতে হয় না।
আপনি দেখবেন, বইতে পড়া ভিলেনগুলোতে দুনিয়া ভর্তি, অথচ হিরোগুলো একজনও বাস্তবে এক্সিস্ট করে না। এই ভয়াবহ শূণ্যতা নিয়েই প্রতিটা বইপড়ুয়া মানুষকে বেঁচে থাকতে হয়।
একটা সময় গিয়ে কেউ বই পড়া ছাড়ে। কেউ আবার রিয়েলিটিটারেই ছাইড়া দিয়া কল্পনার জগতে পার্মানেন্ট বসবাস শুরু করে। কেউ আবার এই দুই জগতের মধ্যে ক্রমাগত খাবি খাইতে থাকে আর ভাবতে থাকে, এখান থেকে মুক্তির উপায়টা আসলে কী?
এই যে একটা শঙ্খনীল কারাগার, এই কারাগারে একজন বইপড়ুয়া মানুষকে সারাটাজীবন বন্দি হয়ে থাকতে হয়। এই ক্লান্তিকর কারাবাস সহ্য করার শক্তি যাদের নাই, তাদের বই পড়ার অভ্যাসটা আসলে না করাটাই বেটার।
যে বাকের ভাই, অনিমেষ, রূপা বা মাধবীলতারে আমরা কোনদিন পাবো না, সেই বাকের ভাই বা অনিমেষের জন্য আমাদের মন আজীবন অপেক্ষা করে থাকে। এই অসহ্য এই যন্ত্রণার কোন মানে হয়?
বিশ্বাস করেন, বইপড়া কোন শখ না। বরং একটা সময়ের পর এই বই হইয়া উঠে ভীষণ ক্লান্তিকর একটা হাহাকার। হয়ে উঠে অত্যন্ত সুন্দর একটা কল্পনার জগতের সাথে কুৎসিত বাস্তবতার ক্রমাগত ফাইটের এলিমেন্ট।
এতোকিছুর পরেও, আমরা যারা স্বেচ্ছায় এই অসহ্য যন্ত্রনা প্রতিদিন বয়ে বেড়াই, এই বদি আর মামুন সাহেবে পৃথিবীতে আমরা যারা এখনও বাকের ভাইকে খুঁজে ফিরি, আমাদের মতো অস্বাভাবিক মানুষগুলোর জন্য বিশ্ব বই দিবসের শুভেচ্ছা রইলো।
আমাদের এই যন্ত্রনা আর অপেক্ষাটুকু অমর হোক।
আমাদের এই ক্লান্তি দিন দিন আরো নান্দনিক হইয়া উঠুক।
আমাদের কল্পনার এই অপূর্ণতাটুকুই আমাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন হয়ে উঠুক, কায়মনবাক্যে আমি এই প্রার্থনাই করে চলি সবসময়ই।
অমার্জিত মন্তব্য করে কোনো মন্তব্যকারী আইনী জটিলতায় পড়লে তার দায় সম্পাদকের না৷