রাজা : সেনাপতি!
সেনাপতি : হুকুম করুন, হে রাজন।
রাজা : আমার কথাই যে ঈশ্বরের কথা সে তো ভালো করে জানো।
সেনাপতি : আলবৎ, হে রাজন। আপনি যা করেন তা ঈশ্বরেরই কাজ। ঈশ্বরের কথা ছাড়া আপনি মাথার চুলে অঙ্গুলী সঞ্চালন পর্যন্ত করেন না।
রাজা : সাবাস! যোগ্য সেনাপতি!
সেনাপতি : আপনার সুনজর, রাজন।
রাজা : তুমি কি চাও এই পাহাড়ি উপত্যকায় আমরা আজীবন নির্বাসনে থাকি?
সেনাপতি : কিছুতেই চাই না হে রাজন। যত দ্রুত সম্ভব আমাদেরকে গুছিয়ে লোকালয়ে ফিরে যাওয়ার শক্তি সঞ্চার করতে হবে।
রাজা : শোনো হে সেনাপতি। যদি বলি তোমার সামনে দণ্ডায়মান এই পাঁচজনের মস্তক ছিন্ন করো, করবে?
সেনাপতি : (তলোয়ার ঊর্ধ্বে ঘুড়িয়ে এগিয়ে যেতে যেতে) একবার বলুন, রাজন।
রাজা : থামো। ঐ বন্দীকে হত্যা করো।
সেনাপতি : ঈশ্বরের আদেশ! (এক কোপে দ্বিখণ্ডিত করবে)।
রাজা : সাবাস! যদি বলি তোমার ডান হাত দিয়ে বাম হাত কেটে ফেলো।
সেনাপতি : (ডানহাতে তলোয়ার তাক করে) হুকুম করুন, হে ঈশ্বরের সন্তান।
রাজা : থামো! তুমি পরীক্ষায় পাশ করেছো।
সেনাপতি : সে আপনার সুনজর, হে রাজন।
রাজা : শোনো, যে দুজন গুপ্তচরকে আমি পাঠিয়েছিলাম তারা ফিরে এসেছে। আমার জন্মভূমির একদল সওদাগর পাহাড়তলী বাজারে সওদা নিয়ে এসেছে। ওরা সেগুলো বিক্রয় করে অনেক পণ্য কিনবে। আজ রাতে বিপুল অর্থ ও পণ্যসহ তারা স্বদেশের দিকে রওনা হবে। সাত তারার লেজ যখন মধ্য আকাশের দিকে ঘুরে যাবে তখন তারা ভূতপাহাড়ের পাশের রাস্তা দিয়ে যাবে। ভয়ে সেখানে কেউ ডাকাতি করতে যায় না।
সেনাপতি : হে রাজন, পৃথিবীর কোনো ভূত আমার সামনে দাঁড়াতে পারবে না।
রাজা : শোনো, ঈশ্বরের সাথে আমার কথা হয়েছে। ঐ পণ্যগুলোকে তিনি দয়া করে আমাদের অধীন করে দিয়েছেন। ঈশ্বরের দেয়া পণ্য আনতে গিয়ে রক্তপাতেও যেনো বুক না কাঁপে। ওখানে তোমরা যে সফল হবে তা ঈশ্বর আগেই বলে দিয়েছেন। অতএব, পেছাবে না কখনো।
সেনাপতি : হে রাজন। আমরা এখনি রওনা হচ্ছি। ঐ যে সাততারার লেজ মধ্য আকাশের দিকে অনেকখানি এগিয়ে গেছে।
রাজা : ঠিক আছে। যাওয়ার আগে ভালো করে জেনে রাখো, যদি কোনো কাপুরুষ ভীত হয়ে দায়িত্বপালন থেকে ফিরে আসে তাহলে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ঈশ্বরসেনাদের হাতে তার নির্মম মৃত্যু হবে। সেনাপতি, তুমিও সাবধান থেকো। সেনাপতি : হে রাজন, আমি আপনার আদেশের গোলাম। যদি আমার স্খলন ঘটে তবে কোনোকিছু জিজ্ঞেস করার আগেই আমার মস্তক কেটে কুকুরের খোয়াড়ে ছূড়ে মারবেন। আপনার আদেশকে আমি ঈশ্বরের আদেশ মনে করি।
উপদেষ্টা : হে রাজন। বেয়াদবী মাফ করবেন। যখন সওদাগর দলের উপর দূর থেকে বর্শা নিক্ষেপ করা হবে তখন নিষ্পাপ সৎ মানুষও মারা যেতে পারে। এখানে আমাদের আত্মীয়-স্বজনও থাকতে পারে। আপনি কি ঈশ্বরের সাথে শেষবার কথা বলে দেখবেন। যদিও জানি তাঁর হাতে বানানো পুতুলকে তিনি কারণে বা অকারণে ভেঙে ফেললে আমাদের করার কিছুই নেই।
রাজা : সেনাপতি!
সেনাপতি : হুকুম করুন।
রাজা : এই লোকটার বিশ্বাসে মারাত্মক ঘুণ ধরেছে। মূহুর্তে এর মস্থক ছিন্ন করো।
সেনাপতি : (তলোয়ার বের করে এক কোপে মাথা ছিন্ন করে বলবে) ঈশ্বরের আদেশ।
রাজা : যাও, দ্রুত যাত্রা করো।
সেনাপতি : (অন্য পাঁচজনের দিকে তাকিয়ে) দ্রুত ঘোড়া ছোটাও।
রাজা : (স্বগোক্তি) ঈশ্বর আবার কে? আমিই ঈশ্বর? আমি ঈশ্বর বানাবো? সেই ঈশ্বর আমার কথামত চলবে। আমার কথাই তাঁর কথা; তাঁর কথাই আমার কথা। ঈশ্বর থাকেন শক্তির পক্ষে। সারা বিশ্বের ইতিহাস আমি দেখেছি। যারা যত বেশি হত্যা করতে পেরেছে; ডাকাতি করতে পেরেছে; জাতি নির্মূল করতে পেরেছে; পরের সম্পদ নিজের করতে পেরেছে তারাই ক্ষমতাধর। ডাকাতির মাধ্যমে হয়েছে অনেক সভ্যতার পত্তন। আমি আমার নীতিতে অটল। এ থেকে বের হওয়ার কোনো পথ নেই।
বিশ্বাস! হ্যা, বিশ্বাস আমার বড় অস্ত্র। আমি জানি, দূর্বল মানুষকে বশিভূত করার সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলো বিশ্বাস। এখনও গঙ্গা-স্নানে ছোটে লক্ষ লক্ষ মানুষ; এখনো মানুষ করে কালো পাথরের পূজা। প্রকৃত ধার্মিকেরা ধ্যানে থাকবে আর আমি সেটাকে কাজে লাগিয়ে গোটা পৃথিবী দখলে নিবো।
বীরকে বাগে রাখার অস্ত্র হলো সম্পদ ও নারীর লোভ। পৃথিবীর প্রখ্যাত শাসকরা রেখেছিল হাজার হাজার যৌনদাসী। আজও তারা মানুষের কাছে আদর্শ নায়ক।
বি.দ্র. জীবিত বা মৃত কোনো চরিত্রের সাথে এই নাটকের চরিত্রের মিল নেই। এটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক। আশা করি পৃথিবীর কোনো চরিত্রের সাথে এর চরিত্রগুলো মিলবে না। এই নাটকটির উদেশ্য হলো সেই সব মানুষের ভেতরকে বাইরে বের করে আনা যারা বিশ্বাসের নামে, ধর্মের নামে অধর্ম করে। পাশাপাশি সেই সব রাজনীতিবীদদের ভেতরকে প্রকাশ করা যারা দেশপ্রেমের নাম করে সাধারণ মানুষকে ঠকায় ও ঠকানোর সুবিধার্থে ধর্মকে ব্যবহার করে।
পৃথিবীর সকল ধর্মের শান্তিপূর্ণ মানবিক কাজের প্রতি শ্রদ্ধা।
৩.৪.২০২৩
ঢাকা, বাংলাদেশ
24 মন্তব্যসমূহ
সম্পাদক কে ধন্যবাদ অসাধারণ একটি নাটক প্রকাশ করায়৷ প্রতিদিন নতুন নতুন লেখা পড়তে চাই৷ সম্পাদক থেমে যাবেন না৷
উত্তরমুছুনধন্যবাদ ফিরোজ সরকার।
মুছুনপ্রক্রিয়া সতত চলমান...
বাহ্ সুন্দর, লেখক মহোদয় এবং সম্পাদক মহোদয়ের প্রতি শ্রদ্ধা ও শুভ কামনা।
উত্তরমুছুনধন্যবাদ ও ভালোবাসা
মুছুনজন্মসূত্রে আমি কবি। কিন্তু সারা জীবন আমি হাজার চেস্টা করেও কোনো কবিতা লিখতে পারিনি। কোন সম্পাদক দেখলে একটু নমস্কার, পুজো পার্বণে কবিদের সাথে চা টা খেয়ে একটু অঞ্জলি, ফেসবুকে বন্ধুদের কবিতা পাঠানো, এই পর্যন্তই আমার দৌড়। এই জীবনটা তো এভাবেই কেটে গেলো,এখন খুব টেনশনে আছি আমি কি এমতাবস্থায় কবি হতে পারব? মোকলেছুর রহমান কবি ও সম্পাদক কোন উপায় জানা আছে কি আপনার? তবে একটাই ভরসা আমার মত অনেক বন্ধুর জন্যই এখন মোখলেছুর রহমান দাদার মতো অনেক সম্পাদক আছেন সুপরামর্শ কাম্য
উত্তরমুছুনমকলু তুমি এতদিনে
উত্তরমুছুনভাল হয়েছ আজ
হাজার পাঠকের চোদন খেয়ে
করেছ কাজের কাজ
তোমার হোক উন্নতি
এটাই জানাই প্রণতি
ইদ্রিস আলী সব সময় আমাদের চেষ্টা থাকে ভালো লেখা প্রকাশ করার। কিন্তু নতুন লেখকের লেখা প্রকাশ করতে গিয়ে আপনার মতো অনেকে বিচার বিবেচনা না করেই অমার্জিত ও অশালীন মন্তব্য করে বসেন যা কাম্য নয়।
মুছুনসে যাই হোক ভালো থাকুন, সাথেই থাকিন।
ছোটভাই তুমি এগিয়ে চল
উত্তরমুছুনআন্দোলন কর
নাটক করো
এগিয়ে চল
তোমাদের জয় হবেই ✊
ধন্যবাদ ভাই
মুছুনসময়োপযুক্ত নাটক
উত্তরমুছুনবর্তমান সময়ের সাথে খাপে খাপ মিলছে
মকলু দোস্ত তোর উন্নতি হচ্ছে
লেখা পড়ে ভালো লাগলে সম্পাদকের উন্নতি হয়েছে,
মুছুনলেখা পড়ে ভালো না লাগলে লেখক ও সম্পাদককে গালাগালি এ কেমন ভদ্রতা?
Nice লাগলো মকলু চাচ্চু
উত্তরমুছুনধন্যবাদ
মুছুনমঞ্চায়ন করলে দারুণ হবে জয়নুল ভাই আমরাই এটা মঞ্চস্থ করবো
উত্তরমুছুনতুমি রেডি রাখো
এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।
মুছুননাট্যকারের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা করেন
মুছুনরাজার গোয়া উপুত করি গরম তেল ঢালি দিলে ঠিক হইবে ৷ এলকার রাজাবাদশার ঘর অমনে বাহানচোদ
উত্তরমুছুনতোমরা ফির এত একটিব হইলে কেনে বা সম্পাদকের ব্যাটা
উত্তরমুছুনএলা ক্যা বা পুত্তিদিনে পত্রিকা প্রকাশ করেন নয়া নয়া লেখা
ভালে তো নাগে
চালে যাও বাহে
সাথেই থাকুন
মুছুনচালিয়ে চালিয়ে ছোটু ভা্ই, ভাল হ্ইছে নাটকখান। চলুক ্আরো
উত্তরমুছুনজী চলবেই
মুছুনকি নাটক পরলুম ভাই, বদনা হইয়ে গেলুম৷
উত্তরমুছুনলিটল ম্যাগাজিন শ্বেতপত্র নিয়মিত পড়ুন, সাথেই থাকুন।
মুছুননাটকটা সুন্দর হইছে। বিটিপিতে প্রচার করার মত। মানুষের অনেক উপকার হবে।
উত্তরমুছুনঅমার্জিত মন্তব্য করে কোনো মন্তব্যকারী আইনী জটিলতায় পড়লে তার দায় সম্পাদকের না৷