New

শ্বেতপত্র

প্রেরক: অনিরুদ্ধ সুব্রত

শোনো সাম্য

তোমার দেশেও নয়, আমার দেশেও নয়,
গ্রাম কোনো দিনই শহর হয়ে যাবে না
তাকাবে, চমৎকৃত হবে, দু'একটি আঁচ চুরি করে
বা চেয়ে নিয়ে সড়কের চৌ-মাথায় টাঙাবে
ঘটা করে ঘেঁটে তুলবে নিজেকে আহ্লাদে বা
আতসে, আতঙ্কে ; তারপর হে হে করে হেসে
জল কাদা কুয়াশা শিশিরে জড়িয়ে মড়িয়ে
গ্রাম শেষ অবধি নাগরিক চাঁদের রাতে
একবার‌ও কিন্তু ভুলে যাবে না---
তার নাড়া ভরা চাষ-ক্ষেত, ঘাস-আল, জল-নালা
অনাবৃষ্টি আঘাতের না-ঢাকা ফুটি ফাটা দাগ
ফালা ফালা করা অসভ্য-নাঙলের অভ্যাস
অথবা খাল-ভাষা বন্যার নষ্ট প্লাবিত থৈ থৈ
নাছোড় শরীর তার, ভুলতে সে পারবেনা---
কখনও কখনও মাচা থেকে অনভ্যাস নামিয়ে
আষ্টেপিষ্টের ধুলো ধুয়ে, লরি বাস ট্রেন চড়ে
ফুটপাতে ভুল হেঁটে, ঠিকানা শুনে শুনে
খিদে পেটে, কপালে খোয়াব সেটে, হয়তো যাবে
মহানগরে--- মহতের রেট্রোস্পেক্টিভে
কাতারে কাতারে ভিড়ের ভিতরে করতালি দিতে
কিন্তু পৃথিবীতে অবধারিত ভাবে রাত হবে
জোনাকি, পেঁচার দেশে গ্রামকে ফিরতে
পুনরায় জীবনকে টেনে এনে
পার্থিব পার্থক্যের পিনে গেঁথে দিতে
অকংক্রিটের অবোধ শরীরে অন্ধকার ও গাছের
কাছে, শুকনো পাতা ও নৌকো নদীর কাছে
যে মাটির উনুনে এখনও ফ্যানভাত ফোটে
তার কাছে, শুধু কতগুলো মোবাইল টাওয়ারে
পারবেনা, গ্রামকে শহর করে দিতে---
শীত ও আতপে খালি হাত আদতে
তবু যতবার যতটুকু ছুঁয়ে এসে ভেসেছে
ফসল কাটা দিনের শেষে যে আড়বাঁশি
আপ্রাণ তাতে ঘামে ভেজা ঠোঁট ফুঁ দিয়ে দেখেছে
কখনও বাজে, কখনও বাজে না---
সারারাত বালিশের নিচে মুঠো খোলা চেটো
সে কোনো বারুদ টর্পেডো না
তার পেট --- নবান্ন-ভোর ছাড়া স্বপ্ন পারে না
সম্ভাব্যের গায়ে বসা ঝাঁক ঝাঁক কীট নাশকের
চেয়ে বেশিদূর বিপ্লব সে তো জানে না---
বিশ্বাস করো সাম্য,
গ্রাম কোনো দিনই শহর হয়ে যাবে না, বহরে‌ও না।


ইতি

অনিরুদ্ধ সুব্রত

২. ৮. ২০২৩

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ

অমার্জিত মন্তব্য কাম্য নয়