সম্প্রতি পড়লাম অমিতাভ দাসের গল্পগ্রন্থ 'গ্রহের নাম প্যাংটিটলো'। কলকাতা বইমেলা থেকে সংগ্রহ করেছিলাম। পড়েও ফেলেছিলাম আগেই। আবার পড়লাম। (বিভিন্ন বই বা পত্রিকা ফিরে পড়ার অভ্যেস আমার আছে।)
তিন ফর্মার ক্ষীণতনু বইটিতে আছে দশটি শিশু-কিশোর উপযোগী গল্প, যার বেশ কয়েকটি আগেই নানা ব্লগ ও পত্রিকায় পড়া ছিল। ছিপছিপে গ্রন্থ, তরতর করে বয়ে-চলা ভাষা, গতিময় গদ্যে লেখা প্রতিটি গল্পপাঠে অদ্ভুত প্রাণের আরাম পাওয়া যায়। প্রথম গল্প 'পাখি ও রাজকুমারী' রূপকথার আঙ্গিকে লেখা, অপরূপ তার বয়ন। এছাড়া 'চন্দ্রকেতুগড়ের সৈনিক', 'মন্দিরের পেছনে কে?', গল্পদুটিতে ভৌতিক আবহের সঙ্গেই আছে ইতিহাসের যোগসূত্র। 'রবীন্দ্র সরোবরে একরাত'-ও একটি ভূতের গল্প। 'টো টো কোম্পানীর ম্যানেজার' বেশ মজাদার গল্প। এই গ্রন্থের অন্যতম চমৎকার গল্পটি হল 'মঙ্গলম্ বি টু'। মঙ্গলগ্রহে সাহিত্য সমাবেশের আয়োজন এবং সেখানে আমন্ত্রিত গুণী পঞ্চকন্যা, আমাদের অতি পরিচিত ও প্রিয়জন তৃষ্ণা বসাক, ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়, শ্যামলী আচার্য, প্রিয়াঞ্জলি দেবনাথ এবং কাকলি দেবনাথ। এঁদের গুণ সমাদৃত করাই শুধু নয়, এঁদের কৃতিও কাজে লাগাতে চায় মঙ্গলগ্রহ। অমিতাভর এই অভিনব ভাবনাটি চমৎকৃত করেছে। গ্রন্থনামের গল্পটিও সুখপাঠ্য।
প্যাংলো নামে অমিতাভর একটি বিড়াল-চরিত্র আছে, যেটি বারবার নানা গল্পে ফিরে ফিরে আসে। মঙ্গলগ্রহের থেকেই সম্ভবত এর আগমন। (সত্যিই এই নামে বিড়ালটি অমিতাভর আছে কিনা জানি না।) 'গ্রহের নাম প্যাংটিটলো', 'প্যাংলোর খোঁজে নীলকুঠিতে একদিন', 'গোপাল খুড়োর অসুখ' নামের গল্পগুলোতে প্যাংলোর উজ্জ্বল উপস্থিতি। 'সবুজ রঙের পদ্ম' গ্রন্থের শেষ গল্প এবং খুবই মনোরম।
আর-একটি প্রসঙ্গও বলা যাক। অমিতাভ গ্রন্থটি উৎসর্গ করেছে যাঁকে, তিনি আমাদের অগ্রজ ও গল্পলেখার পথপ্রদর্শক গৌর বৈরাগী। তিনি একজন প্রাজ্ঞ লেখক, শ্রদ্ধেয় এবং কিশোরের মতোই অমলিন হাসেন। শিশু-কিশোর উপযোগী এমন একটি গ্রন্থ, অমল হাসির মানুষটিকে উৎসর্গ করা যথার্থই মানানসই বলে মনে হল। গৌরদাকে প্রণাম।
গ্রহের নাম প্যাংটিটলো
অমিতাভ দাস
গেটওয়ে পাবলিশিং হাউস
মূল্য ১২৫ টাকা
2 মন্তব্যসমূহ
Nice reviw
উত্তরমুছুনসুন্দর লেখা। বই রিভিউ ভাল হইছে।
উত্তরমুছুনঅমার্জিত মন্তব্য করে কোনো মন্তব্যকারী আইনী জটিলতায় পড়লে তার দায় সম্পাদকের না৷