New

শ্বেতপত্র

প্রেরক: রাজ্য জ্যোতি


নিলাঞ্জনা, 
আমার সস্তা ব্যস্ততাকে ঘিরে তোমার যত-শত অভিযোগ। কেন ফোন করে আমাকে পাও না, কেন এতো লোকের সাথে আড্ডা, কেন এতো মিটিং-মিছিল। অভিযোগের এক লম্বা তালিকা। 

মাঝে মাঝে আমার তোমাকে মানসিক ভারসাম্যহীন রোগী মনে হয়। আদর করে পাগলি বলে ডাকি। তুমি এই ডাকে কেন জানি কখনো রাগ করো না। উল্টো খুশিই হয়। একটা ইনোসেন্ট ভাব চলে আসে তোমার মাঝে।  

হঠাৎ মনে প্রশ্ন জাগলো বাঙালি প্রেমিকারা পাগলি বলে ডাকলে রাগ করে না কেন? তারা খুশি হয় কেন? হাই স্কুলে বন্ধু আরিফকে 'আরিফ পাগলা' বলে ডাকতাম আমরা কয়েকজন। আরিফ তো চটে যেত! তাহলে মেয়েরা রাগ করে না কেন? এটার কি পুরুষতন্ত্র বা নারীবাদের সাথে কোন যোগ আছে? নাকি অন্য কোন ব্যাপার? এর একটা চুলচেড়া বিশ্লেষণের অভাব অনেক অনুভব করছি। গভীরভাবে চিন্তা করলে এটা কিন্তু অনেক বড়সর একটা গবেষণার বিষয় হতে পারে! থিসিস করা দরকার এই টপিকে। 

এসব বিষয়ে গবেষণা করে কিন্তু দেশের উন্নয়নেও ভূমিকা রাখা সম্ভব! 
আজকে যে আমার বয়সী প্রেমিক পুরুষরা প্রেমিকার রাগ ভাঙানোর জন্য বিভিন্ন সৃজনশীল উপায় খুজে বের করছে, এই গবেষণাকে কেন্দ্র করে সেই প্রেমিকদের জন্য একটা আস্ত বই লিখে ফেলা যাবে। এই বই পড়ে তারা প্রেমিকার রাগ ভাঙাবে। বিভিন্ন গাইডলাইন দেয়া থাকবে বইটিতে। তাতে করে সৃজনশীল প্রেমিকদের সময় বেঁচে যাবে অনেকটা! কষ্ট করে উপায় বের করতে হবে না। ফলে তারা সেই সময়কে অন্য কাজে ব্যবহার করতে পারবে। অন্য চিন্তা করে দেশে পরিবর্তন আনতে পারবে হয়তো। এখানে বাটারফ্লাই ইফেক্টের কথা টানা লাগে, আরকি।

আবার উল্টো ঘটনাও ঘটতে পারে। এরকম গাইড বই পড়ার ফলে হয়তো তাদের সৃজনশীলতাই নষ্ট হয়ে যাবে একদম। হয়তো তারা শুধু এসব বিষয়েই ভাবতে পছন্দ করে। ভালো কিছু নিয়ে ভাবার অবকাশ নেই তাদের। এই বিষয়ে ভাবার সুযোগ কেড়ে নিলে তারা হয়তো ভাবনাই ছেড়ে দিবে। ফলে তাদের মস্তিষ্কই পঁচে যাবে!

অনেক চিন্তার পরে মাথায় এলো, সম্ভবত এই বিষয়ে ইংরেজি কোন রিসার্চ পেপার নেই। থাকলে ডক্টর কুদ্দুস মিয়ার মতো কেউ সেটাকে বাংলা অনুবাদ করে নিজের নামে চালিয়ে দিতেন। শুধু সার্ভে করে সেটাকে গবেষণা বলে চালিয়ে দেয়ার কালচার থেকে আমরা কবে বের হবো তুমি কি এটা বলতে পারবে আমাকে, নিলাঞ্জনা? দেশীয় সকল বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় যে দিন দিন রিসার্চের সংজ্ঞাই বদলে দিচ্ছে। পরবর্তী প্রজন্ম তো রিসার্চ বলতে শুধু সার্ভেকেই বুঝবে!

যাই হোক, আজকের মতো শেষ করছি। ভালো থেকো, পাগলি। রাগ কমলে আনব্লক করে ফোন দিও।

- ইতি,
তোমার বর্গীয়'জ ('জ')

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

10 মন্তব্যসমূহ

  1. দিলে লাগে ব্যাতা রে
    হাত ছাইরা দেও সোনা রাজ্য রে

    উত্তরমুছুন
  2. কি দুষ্টু ছেলে তুমি। এত মিষ্টি করে কেউ লিখে? হৃদয় কাতর হয়ে যায়। এরকম করে আর লেখোনা কেমন? আবার লিখলে কিন্তু সম্পাদকের টাকু মাথায় ১০০ চুমু দেবো, এই আমি বলে রাখলাম।

    উত্তরমুছুন
  3. আতা গাছে তোতা পাখি, ডালিম গাছে মৌ,
    রাজ্য তুমি চুপ করো, খুঁজছি তোমার বৌ॥

    উত্তরমুছুন
  4. প্রেমিক কবি ইদ্রিস আলীবৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

    ভালবাসি বলছি
    জিবনটা কলসি

    উত্তরমুছুন

অমার্জিত মন্তব্য কাম্য নয়