New

শ্বেতপত্র

রাঈসা সিদ্দিকা-র একগুচ্ছ কবিতা



মঞ্চ

সবগুলা কারণসহ 
রাগের, শ্রাগের, এবং দুঃখের,
আমি, 
না থাকার মতো এই পৃথিবীতে, কেবল
বসে ও দাঁড়ায়ে আছি, 
জড়ের টুকরা বলা যায় না,
কারণ কাঁদি, তাহলে,
জড়ের মতো জীব, জীবের মতো জড়?

এরপরেও যদি কিছু থাকে, থাকার কথা,
দ্বিধাময় দ্বিধা, শুধু। 
কাকের মতো কা কা, বাজতেছে,
শুনতেছি, 
আছি, যেমন
একটা চাঁদের গাড়ি হাঁপর তুলে দৌঁড়াতে থাকে। 
হাঁপর তুলে, জড়ের টুকরা বলা যায় না। 
দৌঁড় ..... 

সবগুলা কারণ জোট বাঁধে, 
দুইহাত দুই পাশে দিয়ে, অন্যদের ধরে,
একটা কিছু বড় হয়ে
চুলগুলায় সব মেঘেরা দলা পাকায়ে ফেলে। 
একটা ইউফোরিক পাথর পাইছো,
এটা বলতে হবে, লোক জানায়ে,
তুমি তো পাও নাই কোন ইউফোরিক পাথর,
এইভাবে "মিথ্যার মতো মহাপাপ" তত্ত্ব দিয়ে মিথ্যা বলা শিখতে হয়। 

যা ছিলো চাওয়া, শোনা যায়,
এগুলা, না ভোটের ব্যালটপেপার নিয়ে
সব গানের গায়ে সুরে সুরে
বিরতি ও অবিরতি হয়ে 
ঝিম ধরে যাওয়া পায়ে, সবগুলা রোমকূপে।


বস্তুবাদ

সবগুলা সর্বনাম থেকে
হাত গুটায়ে ফেলার দাবিটা ঘড়ির এখন!
টিকটিক স্লোগানগুলাতে 
ঘেউঘেউ ট্যাগ বসায়ে,
উদার প্রতিমার ভালুক ভালুক হৃদয়ে
হাত দুইটাকে 
ফিরে যাওয়ার হুকুম দেয়া হইতেছে। 

আয়ু ও পরমায়ুর
সমীকরণিক ঢালে চড়ে চড়ে 
নেমে যাবে যাবে, নেমে গেছে 
আমি, তুমি, আপনি
উদর ফেলে শহরের সব পোড়া পেঁয়াজুতে,
দুটো হাত!

আমরা কি উজাড় হবো 
সফেদি শপথে
জোড়ালো নিবিষ্টতায় ঘড়ির বুকে, 
মা মা গন্ধময়ী শ্বাসে,
অথবা, 
আমরা কি ঢালাইই হবো আহ্নিক গতিতে,
উনুনে গা তাপায়ে
নর্দমা ও সমুদ্র এক থাকার কানুনে? 

জীবিত ঘড়িদের 
সভাহীন আলগা খোঁপার বাঁধন 
প্রতিবাদের পরিণয়ে
পড়ে আছে নির্লিপ্ততায়,
শুরুর বিভবে শেষের পরাভবে!

জল পড়তেছে ঈশ্বরের চোখ দিয়ে! 
জল মুছায়ে দাও! 
দুইটা হাত দুইজনই যাও!


দশা 

আমার ভিতরে জমা কতগুলা পিঁপড়া
বুকটা কাঁপাইতেছে 
জিহ্বা শুকাইতেছে
"একটু পানি খাও" বলতেছো যে তোমরা, 
বুঝে বলতেছো কি? 

আমার কেমন লাগা-
ভাষাকে অতিক্রম করছে
নাচতেছে এক মনে, 
না জিরায়ে, দম ধরে, 
বলরেখাগুলা মুখের উপর আলো ফেলতেছে
নাচ চলতেছে, শরীর মরতেছে,
ক্লাসিক অবশতায়
চলতেছে...

করিডোর ছুঁইতেছে জুতা
ঘুমাইতেছে যে বিড়ালগুলা খিদা পেটে
ওরা ঘুমাক অনন্তর, খিদাগুলা মরে যাক,
একপাশে যেয়ে, 
মুক্তি....
আকাশ ছাড়া আর কে আছে আমার?
আমি শুয়ে পড়ি তবে, 
ঘাসে, পাতিঘাসে, 
আমিও ঘুমায়ে যাবো, রাত তিনটা এখন,
পাতানো 'সইপাখি' এলে সকালে,
ডাক দিলে, উঠতে পারি, 
নয়তো কী হয়, কে জানে, 
একমুখী কিংবা নানামুখী ঘুমে ও ঘামে!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ

অমার্জিত মন্তব্য কাম্য নয়