New

শ্বেতপত্র

শিশির আজম এর গুচ্ছ কবিতা






পহেলা বৈশাখের টেবিল

টেবিলটা তিনদিন খায়নি, বিশ্রামও পায়নি। আজ পহেলা বৈশাখ
আজ ও কথা বলবে, ঘোরাফেরা করবে
পুরনো ডাকটিকিটটা আড়াল করে
যেটা গতবছর হারিয়ে গিয়েছিল, সম্ভবত নতুন কেটে রাখা
গাছের তাজা কোন গুড়ির নিচে।
কিন্তু ওর দেহের ত্বকের ভেতর থেকে ভেসে ভেসে উঠছে
চিত্রবিচিত্র
সুডৌল
তীক্ষ্ণ
একেকটা রেখা, অনেকানেক রেখা।
এরা
এই রেখাগুলো
এরা তো মারাত্মক সেন্সুয়াল, না কি এন্টিক্লাসিক!


কচ্ছপের খোলস

মানুষের মতো মারা যায় কচ্ছপ।
মরার আগে কঠিন খোলস রেখে যায় এটা বোঝাতে যে
                         দাসমালিকের প্রতি তার শ্রদ্ধা নিখাঁদ ছিল না

বিষয়টা অমিমাংসিত। উপসাগরের তীরে অপেক্ষমান জাহাজের মাথায়
চিলেরা পাক খাচ্ছে। দৈনিক পুরাণে ভর করেছে কী ভবিতব্য!
অস্বস্তি। কাঁটা চামচে উঠে আসবে
                        হোটেলের নির্বিকার ও সুপরিসর কক্ষ

সোনালী বোতামে মৃত শিশুদের রূপকথা। বাঁশবাগানের অন্ধকার দুলে উঠছে
বুড়ো ফেরিওলার ঝোলায়

জেলেনি খোলা চুলে দাঁড়েয়ে ছিল। শোষিত ঢেউ ভিজিয়ে দেয়
তার চোখ। আরেকটা ঢেউ যে তাকে নিতে পারে অন্য এক দ্বীপে,
ছায়ার মুখ



হাতিকে পোষ মানানো মামুলি ব্যাপার

হাতিকে আমি পোষ মানিয়েছি
এখন
আপনাকে দায়িত্ব দিচ্ছি
এই পিঁপড়েগুলোকে তেরো অব্দি গুনতে শেখান তো দেখি

হাতিদের লেখাপড়া তেমন নেই
আপনি জানেন
তবে বুদ্ধিমত্তায় পিঁপড়েরা বেশ এগিয়ে
হয় তো আপনার চেয়েও

আপনার জানা দরকার আলতামিরার প্রাচীন গুহাবাসীদের ভিতর
পিঁপড়েরাও ছিল
হ্যা প্রজাতি হিসেবে এরা আজও টিকে আছে
কেবল যে টিকে আছে তাই না
সৃষ্টিজগতে বিবর্তনপ্রক্রিয়ায়
এরা রীতিমতো প্রভাবক
আর দাঁত ও রক্তের যথাযথ ব্যাবহারে
এরা কখনও হীনমন্যতায় ভোগে না
ভাবুন
কীভাবে এদের বশে আনবেন না অংক শেখাবেন
না কি
আপনি আমার হাতির মাহুত হতে চান


তুমি দেখোনাই

ভুল বুইঝো না, ঘুমায়ে গেছিলাম,
ফের
সাঁঝে
তোমার এসেরীয় বাতাসে।


কথাটা জরুরী

এই রাত তিনটেয় হোটেলের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি
ছিপছিপে চাঁদ
সমুদ্রের একটানা অভিযোগ
হ্যা
একটা কথা বলা দরকার
খুবই জরুরী
তার আগে আমার জানা দরকার
জরুরী কথাটা কী
আর ওটা আমি কাকে বলবো

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
শিশির আজম
জন্ম : ২৭ অক্টোবর, ১৯৭৮
জন্মস্থান, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা : 
                     এলাংগী, কোটচাঁদপুর
                     ঝিনাইদহ -৭৩৩০
                     বাংলাদেশ

কাব্যগ্রন্থসমূহ :
ছাই (২০০৫)
দেয়ালে লেখা কবিতা (২০০৮)
রাস্তার জোনাকি (২০১৩)
ইবলিস (২০১৭)
চুপ (২০১৭)
মারাঠা মুনমুন আগরবাতি (২০১৮)
মাতাহারি (২০২০)
টি পোয়েট্রি (২০২০)
সরকারি কবিতা (২০২১)
হংকঙের মেয়েরা (২০২২)
আগুন (২০২৪)
বিষ (২০২৪)

সম্পাদিত ছোটকাগজ : শিকড়  (৫ টি সংখ্যা প্রকাশিত)
সম্পাদিত কবিতার ভাঁজকাগজ : বাংলা (৩ টি সংখ্যা প্রকাশিত)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ