New

শ্বেতপত্র

রতন অধিকারীর দুটি কবিতা




মিথ্যে হাসি


আমার দেশে...
সমস্ত সত্যই নিষিদ্ধ,
কিন্তু মিথ্যা? মিথ্যা সর্বত্র সিদ্ধ। 
এখানে মিথ্যার কোনও ভয় নেই।
হ্যাঁ মিথ্যার কোনো ভয় নেই, সব ভয় সত্যের। 
সত্য এখানে নিন্দিত, সত্য এখানে নিষিদ্ধ,
সত্য এখানে আক্রান্ত, সত্য এখানে পর্যুদস্ত!
কিন্তু মিথ্যা?
মিথ্যা এখানে রাজা,
মিথ্যা এখানে জনপ্রিয়,মিথ্যার গলায় ঝুলছে ফুলের মালা!
কিন্তু সত্য? সত্য এখানে নিপীড়িত, 
হয়ে আছে সে বোবা,কালা।

সবাই জানি-
সত্য অনেক বেশি মূল্যবান আর শক্তিশালী,
তবুও মিথ্যায় ভরপুর বাংলা, চারিদিকে মিথ্যুক বাঙালি! 
 সত্যের প্রেমিক, সত্য'কে ভালোবাসে যারা,
 সত্য প্রকাশ করতে পারে কী তারা?

সত্য! সত্য! সত্য!
সত্য আজ বেহায়া।
চারিদিকে মিথ্যা, সত্য নির্যাতিত, সত্য নিপীড়িত!

যেদিকেই তাকাই,
মিথ্যুক ভন্ডদের দেখতে পাই।
নাই সত্য! নাই সততা!
আছে শুধু মিথ্যা! 

মিথ্যা! মিথ্যা! মিথ্যা!
কোথায় সত্য? কোথায় সত্যের প্রেমিক'রা?
এই সোনার বাংলায়,
আমার সত্য যে অসহায়! 
কীভাবে মুক্ত করবো এই সত্য'কে?
জানা নেই,
কীভাবে মুক্ত হবে এই বাংলা?

লাঞ্চিত হয়ে যাচ্ছে সৎ ব্যাক্তি'রা
 সত্য'কে বড্ড ভালোবাসে যারা!

সত্যকে মুক্ত করা চাই...
কিন্তু রাস্তা নাহি খুঁজে পাই!
তবুও- আমি
হাসি-খুশি থাকি,বাঁচার চেষ্টা করি,
একদিন সত্য প্রতিষ্ঠা হবে, এই আশাটুকুই করি।

ছোট বাচ্চার মুখে যে হাসি,
সন্দেহ জাগে সেই হাসিতে!
সত্য নাকি মিথ্যা সেই হাসি?
এই বাংলায় ছোট্ট বাচ্চা'টা সেই,
সেই ছোট্টো বাচ্চাটা? সেও ভালো নেই।
যাকে ছোট থেকেই মিথ্যা শেখানো হয়,
মিথ্যা শুনতে শুনতে তার দম বন্ধ হয়ে যায়!


ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে কেউই ভালো নেই তারা,
সত্য'কে ভালোবাসে, সত্য'কে  লালন করে যারা।

তাদের মুখে যে মিথ্যে হাসি, 
সেই হাসি তো হাসি নয়,
ভালো থাকার জন্য মিথ্যে হাসি।
সেই হাসি যে সজীব, টাটকা হাসি নয়,
তা যেন রাজপথে কুড়িয়ে পাওয়া শুকনো হাসি!
 
ভালো নেই তারা!
এই বাংলায়,
তাদের দম বন্ধ হয়ে যায়,
থাকতে নাহি পারে হায়
চারিদিকে মিথ্যা বয়ে যায়। 
মিথ্যা! সবই মিথ্যা,সত্যের আড়ালেও মিথ্যা।



জলফটিক
জলফটিক

প্রিয় তুমি,
প্রতি ক্ষণে, প্রতিটি পরিবেশে
তুমিই আছো আমার স্বচ্ছ হৃদয়ে।

ক্লাসরুম,
নির্জন দুপুর,
উত্তপ্ত বিকেল,
ভোরের ছোঁয়া,
অঝোর বৃষ্টি, 
সে মাঠ,
ঘাস,
  জনহীনা, জনস্থান
একান্ত বন্ধুময় সময়
আমি যতবার 
         প্রমাণিতভাবে উপস্থিত 
সে বাস্তব সমীকরণে।

যদি কখনও আমি নেই
তবে,
সমীকরণ  করিও
অবাস্তব প্রমাণে।
আমি আছি প্রকৃতই।
যার যার কাছে, যখন-
আমি একান্তই কাঙ্ক্ষিত 
চোখ বন্ধ করে 
অবাস্তব সমীকরণে,
আমি প্রমাণিত।
তুমি নেই! তুমি নেই! 
হাহাকার চারিদিকে... 
হঠাৎ একদিন তোমার দেখা,
নতুন রুপে, নতুন সাজে।
তোমার ঐ আঁকাবাঁকা লম্বা গোছের চুল,
কখনও খোলা আবার কখনও বাঁধা।
কানে, ডানকানে রক্তজবা।
পড়নে তোমার তাঁতের শাড়ি,
হালকা নীল রঙে!
ডানহাতে পেঁচানো তোমার,
বকুল ফুলের মালা। 
তোমার ঐ গলাখানি,
মুক্ত আকাশের মতন খালি।
চোখদুটো যেন তোমার,
থমকে যাওয়া জলফটিক!
নাকটি যেন তোমার চাঁদের মতন...
তবে যেন ঠিক চাঁদ নয়।
ঠোঁটে লাল পাহাড়ি পাতার লিপস্টিক,
পা দু'খানিতে গহনার প্রচন্ড অভাব রয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ