New

শ্বেতপত্র

সে কিছু তারা খসে যাওয়ার শব্দ পেয়েছিলো পুনঃপ্রসবের রাতে / জ্যোতি আহমদ




থমথমে মেঘাচ্ছন্ন রাত, ঘোলাটে বিবর
আধাফোটা হলুদ ফুল
কুকুরের বিবাদের শব্দ, বর্ষণ প্রত্যাশিত রাত-
পিছিয়ে পড়া লোকেরা ক্রূরতার মধ্যে
জেগে আছে। মুদিত তারার মতো মগজের ভেতরে
স্খলন- উগরে দিচ্ছে প্রচলিত প্রহসন, বিদ্রুপ
আর পুরনো কেচ্ছার মতো কিছু কড়া বিষ।
আজ কেউ কেউ নির্ঘুম মাঠে গেছে, মনে হচ্ছে
সেকেন্ডগুলো দাঁড়িয়ে আছে গাছের গায়ে গায়ে
হেলান দিয়ে- বুভুক্ষু বৈশাখ সমাসন্ন!
কয়েক প্রস্থ মৌলিক বেদনার নির্যাস নিয়ে,
কয়েক দিস্তা কাগজে মুদ্রিত দুঃসংবাদ নিয়ে
এই রাত এখন শুষ্ক তৃষিত করুণ-
যদিও আকাশের গায়ে ঝোলানো কিছু মেঘ আছে
কোনো একটা দুপুরে বা যে কোনো সময় তারা
নেমে এসে কিঞ্চিত তেষ্টা মেটাতে পারে শস্যের-
নাকি আরও কিছুদিন দেরি করবে কে জানে?
আজ এই কুপিত রাত বিবস্ত্র নত হয়ে আছে,
আজ এই নিরালা রাতে চিৎ হয়ে জেগে আছে-
ঘরে ঘরে কিছু লোক নির্জলা মুখে,
কড়কড়ে চোখ নিয়ে অতিদীর্ঘ প্রতীক্ষায়!
একেকটা বৈশাখ বিলাসবহুল মনে হলেও বস্তুত 
ভেতরে ভেতরে বয়ে যাচ্ছে শতদ্রুর বিষণ্ণ স্রোত,
কিছু মানুষ হাঁটাহাঁটি করে সুষুপ্তির মধ্যে-
কতো যে দুঃখ, দুঃস্বপ্ন নিয়ে সিজোফ্রেনিয়ায় ভোগে!
বৈশাখের গতানুগতিক ঝড়ঝাপটা একটু একটু করে
চাউর হচ্ছে দলবদ্ধ নীরবতা ভাঙার জন্যে,
নিরালা মধ্যরাত; এখনও জলসিঞ্চিত হয় নাই-
ভীষণ পিপাসু টুঁটি, মাতৃজঠরে আলো ফোটার
এখনও অনেক দেরি হতে পারে।
পাশ ফিরে শুয়ে থাকা কে এক লোক-
একেবারে মলিন ঢেঁড়সের মতো দেখতে;
হঠাৎ হামাগুড়ি দিয়ে জানলার কাছে গেলো
খালি চোখে দেখে কি দেখে না রাতের উপহাস
চশমার কাচদুটো কুয়াশায় বশীভূত হয়ে
সাময়িক দ্বিধায় পড়ে আছে তেলচিটে বালিশের পাশে-
আজ অজ্ঞাত, অভুক্ত রাতে
সবাই ভুলে বসে আছে শ্রাবণ নয়, সমাসন্ন বৈশাখ!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

43 মন্তব্যসমূহ

  1. হাগা কষা হলে এমন কবিতা হয়

    উত্তরমুছুন
  2. বাহ্ কবিকে অভিননন্দন

    উত্তরমুছুন
  3. কি সুন্দর কবিতা oh fine

    উত্তরমুছুন
  4. গভীর মর্মবোধের উপলব্ধিজাত কবিতা পাঠ করে আমার হৃদয় উদ্বেলিত
    দুবাহু প্রসারিত
    মস্তিস্ক প্রদাহরত
    মনন কন্টকীত

    উত্তরমুছুন
  5. ফিরোজ তালুকদারসোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৩

    খুব উচুমানের কবিতা প্রকাশ করেছো ছোট ভাই। ইনার বাড়ি কোথায়? তার লেখা এমন মননশীল হৃদয়কাঁপানো কবিতা আরও পড়তে ছাই। এই উচ্চমার্গীয় কবির কবিতা প্রকাশ করার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। ইনার আরও কবিতা প্রকাশ কর। আমার ভালো লেগেছ।

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. শ্বেতপত্র পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
      কবির বাড়ি কুড়িগ্রাম, সাথেই থাকুন। এই কবির কবিতা নিশ্চয় পড়তে পাবেন।

      মুছুন
  6. কিসমত জাহান টুনিসোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৩

    বা! দারুণ কবিতা। কবিকে হাজার সালাম। এমন কবিতা পড়ার জন্যই তো তোমার ওয়েবসাইডে আসি ওগো সম্পাদক। আর তুমি কি সব আলতু ফালতু কবিতা ছাপো।

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. সবার কবিতা তো এ রকম বা এক রকম হয় না, নিশ্চয় আগামীতে আর ভালো লেখা পড়তে পাবেন।

      মুছুন
  7. মারাত্মক কবিতা। মর্মের ভিতরে গিয়ে টান দিল। বের হয়ে আসল কাব্যের হাহাকার। ধন্যবাদ কবি ও সম্পাদক

    উত্তরমুছুন
  8. উপমা রুপকের ব্যবহারে কবিকে বেশ পরিণত মনে হচ্ছে। নতুন কবি হিসেবে তিনি সার্থক। তার জন্য খাসদিলে দোয়া করি। তিনি বড় কবি হবেন ইনসাল্লাহ।

    উত্তরমুছুন
  9. ভালো লাগলো কবিতার গঠন ও চিন্তার কাঠামো। কবিকে লাল সালাম। এগিয়ে যাও ছোটভাই। আমরা সাথে আছি।

    উত্তরমুছুন
  10. আহা! আনমনা হয়ে গেলাম। মানবিক হৃদয়ের কাব্যিক ব্যঞ্জনা। তিনি নিয়মিত লিখুন এই প্রত্যাশা করি।

    উত্তরমুছুন
  11. ভালো কবিতা, মুগ্ধ হলাম। কবি ও সম্পাদক উভয়কেই ধন্যবাদ

    উত্তরমুছুন
  12. এতদিনে মকলু
    একটা ভালো কাজ করলু
    মিষ্টি কবিতা ছাপলু
    মনটা ভরিয়ে দিলু

    উত্তরমুছুন
  13. গুলতেকিন কোবরা সুলতানাসোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৩

    জ্যোতি কোবির কবিতার বইয়ের পিডিএফ দে মকলু

    উত্তরমুছুন
  14. হারুন সাংবাদিক প্রেসক্লাবসোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৩

    কবিতা পড়ে বুঝা যায় কাচা হাতের লিখনী৷ নবীন কবির জন্য শুভকামনা

    উত্তরমুছুন
  15. কি লিখেছে কবি নিজে জানে না 😂
    সব শালা কবি হবে

    উত্তরমুছুন
  16. কি সুন্দর কবিতা৷ কবি যেভাবে বিভিন্ন শব্দ দিয়ে অলংকার তৈরি করেছেন, তা মুগ্ধ হয়ে গেলাম৷ কবিকে কৃতজ্ঞতা

    উত্তরমুছুন
  17. কবি মিজানুর রহমানসোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৩

    বা! ভালো৷ জ্যোতিকে শুভেচ্ছা, মোকলেচকে ধন্যবাদ৷

    উত্তরমুছুন
  18. হৃদয়গ্রাহী কবিতা৷ জ্যোতিভাই এগিয়ে যান৷

    উত্তরমুছুন
  19. সোহানা শারমীন (Lago di Como)সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৩

    জ্যোতি, আমার কথা মনে পড়ে কি? বান্ধবীর ঘরের জানালা থেকে তোমার ম্যানলি অবয়ব দেখা যেত। আমার জুলজুল করে তাকিয়ে থাকা দেখে তুমি যেকথা বলেছিলে তা আজ মনে পড়ে গেল। এখন বাস করি গ্রিসের লরিস শহরে। ইটালির কোমো লেকের পাশে বসে তোমার কবিতা পড়ছি। লেখায় তোমার সেই গভীর আবেদন এখনও অটুট। মোকলেছ সম্পর্কে আমার নাতি হয়। ওর এই সাহিত্যপত্রিকাটা মাঝেমধ্যেই দেখি। বেশ উন্নতমানের কাজ করছে। তুমি যদি এখানে নিয়মিত লিখ, তাহলে আমার কৈশোরের স্বপ্ন সত্যি হয়। আমাকে নিয়ে কবিতা যে লিখতে, তা ভুলে যাওনি তো?

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. ধন্যবাদ।
      শ্বেতপত্র নিয়মিত পড়েন জেনে আনন্দ বোধ করছি।

      মুছুন
  20. সাদিয়া সুলতানাসোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৩

    জ্যোতি ভাইকে সেই কিশোরী কাল থেকে চিনি। আমার ঘরের জানালা দিয়ে তাকে দেখার জন্য সোহানা প্রায় দিন বাড়িতে আসতো। সে যাই ভাবুক, আমি তো জানি জ্যোতিভাই আমাকে পছন্দ করতো। হায়! কপাল খারাপ! সেই আশির দশকে তার কত কবিতাই না পড়েছি। রংপুর কুড়িগ্রামের সব লিটলম্যাগাজিন আমাদের বাড়িতে আসতো। আজ বান্ধবীর সাথে লেক কোমোতে বেড়াতে এসে আবার সেই স্বপ্নপুরুষের কবিতার দেখা পেলাম। আমরা সত্যিই সৌভাগ্যবতী। মোখলেছুরকেও ধন্যবাদ আমাদের কৈশোরকালকে বাস্তব করে তোলার জন্য। I still love JOTI 😗

    উত্তরমুছুন
  21. ঈদ এসে পড়ল, কিন্তু এসব কবিদের পয়লা বৈশাখ এখনো শেষ হলো না৷

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. বৈশাখের আমেজ শেষ হতে না হতে ঈদ চলে এলো। ঈদের কবিতাও পাবেন...

      মুছুন
  22. Good poetry, uplifts the poet's consciousness and is idealistic.

    উত্তরমুছুন
  23. গৃদয়ে টাচ করার মতো কবিতা

    উত্তরমুছুন
  24. এত মানুষিক চাপ নিয়ে কী লাভ.!

    বয়স যখন ৪০ পার হয় তখন উচ্চ শিক্ষিত আর
    নিম্ন শিক্ষিত সবাই সমান,

    বয়স যখন ৫০ পার হয় তখন কালো ফর্সা সবই সমান,

    কার চেহারা সুন্দর,দেখতে কে স্মার্ট
    এটা নিয়ে আর কেউ ভাবেনা...

    বয়স যখন ৬০ পার হয় তখন উচ্চ পজিশনে চাকুরী আর
    নিম্ন পজিশনে চাকুরী
    এটা আর কোন ব্যাপার নয়।

    এমনকি একজন পিয়নও অবসরে
    যাওয়া বসের দিকে তাকায়না...

    বয়স যখন ৭০ তখন আপনার বড় ফ্ল্যাট,
    বড় বাসা কোন গর্বের বিষয় নয় বরং বাসা বড় হলে
    সেটা মেন্টেন করাই কঠিন হয়ে পড়ে,
    ছোট একটি রুম হলেই আপনার চলে...

    বয়স যখন ৮০ তখন আপনার টাকা থাকলে যা না থাকলেও তা।
    আপনার টাকা খরচ করার ইচ্ছা হলে
    সেটা খরচ করার জায়গাও খুঁজে পাবেননা...

    বয়স যখন ৯০ আপনার ঘুমানো আর জেগে থাকা একই,
    আপনি জেগে ওঠার পর কি করবেন আপনি নিজেও জানেননা....

    বয়স যখন ১০০ তখন আপনার বেঁচে থাকা আর
    বেঁচে না থাকা এতে কিছুই যায় আসে না।
    পৃথিবীবাসী আপনাকে নিয়ে আর ভাবেনা......

    জীবনের মানে টা এতটুকুই...
    এর বেশি কিছুই না... এত চাপ নিয়ে,
    লোভ করে, হিংসা দেমাগ করে

    টাকা-পয়সার গৌরব অহংকার এবং
    অযথা মানুষের ক্ষতি করে লাভ কী???

    সময়টা ভালো কাজে লাগান,পৃথিবীটা আপনার জন্য সুন্দর হয়ে যাবে।

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. সবাই এমনটা বুঝলে পৃথিবীটা পাল্টে যেত, সবাই ভালো কাজ করুক এটাই প্রত্যাশা।

      মুছুন
  25. মানের প্রতি যত্ন নিলে তমার পএিকা অনেক উপরে যাবে মখলেছ৷৷ সম্ভাবনা অপার ৷তাই আরো যত্মশীল হও ৷ আবালগুলোকে লেখক বানানো বন্দ কর ৷ কোন কোন ভুইফোর লেখক তোমাকে লেকা দেয় আর তুমিও পকাত করে প্রকাশ করে দাও এসব ঠিক না শুভেচ্ছা তোমার ও শ্রেতপএের জন্য

    উত্তরমুছুন

অমার্জিত মন্তব্য করে কোনো মন্তব্যকারী আইনী জটিলতায় পড়লে তার দায় সম্পাদকের না৷